সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন

আমার দেখা কবি কামরুল হাসান -নাসিম আনোয়ার

আমার দেখা কবি কামরুল হাসান -নাসিম আনোয়ার

অধ্যাপক প্রকৌশলী সাহিত্যিক কামরুল হাসান।
চলনে বলনে অত্যান্ত সাদামাটা। বিনয়ী শিশুসুলভ আচরণ।
বড় মনের, বিশাল মাপের খ্যাতিমান মানুষেররা হয়তো এমনটাই হয়।কামরুল হাসান ভাইয়ের সাথে না মিশলে বুঝাই যেতো না তিনি কতো বড় মনের বড় মাপের মানুষ।
২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি। প্রায় চার বছর আগে অগ্রজ কবি কামরুল হাসান ভাইয়ের সাথে আড্ড হয়েছিল। পরিচয়টাও তখনই। গাজীপুরের মৌচাক শাল বনে। সেদিন পুরো শালবন জুড়ে ছিলেন,বাংলাদেশের অসংখ্য খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকদের মিলন মেলা।
কবি আসাদ মান্নান, হাবিবুল্লাহ সিরাজি, কবি বিমল গুহ,কবি রোজী, সাহিত্যি পারভেজ হোসেন,কবি আ ব ম সালাউদ্দিন, কবি মাহমুদ হাফিজ, কবি বদরুল হায়দার,কবি চঞ্চল চৌধুরী ।,লেখক চড়াইভাতি’ র আয়োজক কবি অনিকেত শামীম প্রমুখ ( এখানে অসংখ্য কবি সাহিত্যিকের নাম লেখা সম্ভব হয়নি 🙏)
সকাল আটটায় লেখক চড়াইভাতি বনভোজনে অংশ নেয়ার জন্য শাহবাগে জাতীয় যাদুঘর- পাবলিক লাইব্রেরির সামনে সারিবাঁধা অসংখ্য দোতালা বাস ছিলো।
আমরা বাসে উঠতেই, নাস্তার প্যাকেট হাতে এলো।
ঢাকা থেকে গাজীপুর শালবন মৌচাকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হলো।
শুরু থেকেই আনন্দের বন্যা বইছে। হৈ হুল্লোড়। পালাগান, জারি গান হাততালি।
কবিপত্নী মায়া ভাবী,কবি কন্যা তাহসিন হায়দার।অর্থাৎ কবি বদরুল হায়দারের স্ত্রী কন্যা ছিলেন, আমাদের পাশাপাশি আসেন।
প্রায় চল্লিশ মিনিটের মধ্যেই আমরা পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। মৌচাক বাংলাদেশ স্কাউট রেস্ট হাউজ।সবুজ শাল বনের এই রেস্ট হাউজ টি অপূর্ব। বিশাল এলাকা জুড়ে।
মৌচাকের বাংলাদেশ স্কাউট রেস্ট হাউজ জুড়ে উৎসবের আমেজ। বাস থেকে নেমে যাঁর যাঁর পছন্দের কামরায় প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র রেখেছেন।
পুরো শালবন জুড়ে যেনো আনন্দের বন্যা বইছে।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শীতের মিষ্টি রোদ,আবৃত্তি, সংগীত, খেলা সহ নানাবিধ অনুষ্ঠান।
আমার পুত্র শেখ সাফা নুহান দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান এবং আই কিউ টেস্টে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। আর কন্যা নাজিফা শেখ নেহা মেয়েদের দৌড় প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে।
দুপুরের ভোজন শেষ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরুর আগে বিশ্রাম।কোনো কোনো পরিবার রেস্ট হাউজের কামরায় তন্দ্রায় গেছেন। কেউ আবার দর্শনীয় স্থানে ছবি তুলছেন। কেউ ফুল ফলের গাছের নিচে গল্প করছেন।
আমার স্ত্রী ফারহানা,কন্যা নাজিফা শেখ নেহা, পুত্র শেখ সাফা নুহান পুকুর পাড়ে চমৎকার একটা লোকেশনে বসে ছিলাম।
ছোট পায়ে আমাদের সামনে ক্যামেরা হাতে এগিয়ে এলেন এক ভদ্রলোক। বিনয়ের সাথে বললেন, আপনাদের একটি ছবি তুলি? আমাদের অনুমতি নিয়ে তিনি ছবি তুললেন।
পরিচয় বিনিময় হলো, তিনি কামরুল হাসান। লেখালেখি করেন।ফোন নাম্বার বিনিময়।তাঁর বন্ধু তালিকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হলাম।
মূলত কবি কামরুল হাসান বহুমাত্রিক লেখক। পৃথিবীর বহু দেশ তিনি ভ্রমন করেছেন। ভ্রমন পিপাসুদের অন্যতম একজন।ফটোগ্রাফি তাঁর সখ।
কবিতা,ভ্রমন গদ্য সহ নানাবিধ বিষয় তাঁর গ্রন্থ রয়েছে।
নীরবে সাহিত্যের বিভিন্ন ধারায় কাজ করছেন।বর্তমানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেছেন।
আমি অবশ্য অসুস্থ। দু’ সপ্তাহ আগে হার্ট অ্যাটাক হয়।হাসপাতালের সিসি ইউ-তে এগারো দিন কাটাতে হয়েছে। চারটি ব্লক, তিন টি মেজর ব্লক। আমাকে সার্জারি বিভাগে রেফার্ড করা হয়েছে। সম্ভবত বাইপাস সার্জারি করতে হবে। সুযোগ করে আবার হাসপাতালে যাবো।এখন ঘরেই আছি।
অনেক দিন পরে আজ ঘর থেকে স্ত্রী কন্যার সাথে বেরুলাম।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে কামরুল হাসান ভাইয়ের সাথে দেখা। অবশ্য আমিই তাঁকে ফোন করেছিলাম।তিনি এলেন। পুরো ক্যাম্পাসে আমাদের সময় দিলেন।আপ্যায়ন করলেন আন্তরিকতার সঙ্গে।
ভীষণ ভালো লাগলো তাঁর আচরণে।
ভালো থাকেন কবি কামরুল হাসান।
সুস্থ সুন্দর দীর্ঘ জীবন কামনা করি আপনার 💞

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD