খুব গভীরভাবে কোনো কিছুতে ডুবে যাওয়া মানে, তার সাথে একটা নিবিড় বন্ধন তৈরি করে ফেলা। এমনটা যদি লেখালেখি, পড়ার অভ্যাস, একা থাকা কিংবা কাজের দায়িত্ববোধে হয়, তবে ভালো কিছুই দেয়। সম্পর্কের বেলায়, সে সম্ভাবনা নেই।
সম্পর্কগুলো এমনই। বছরের পর বছর একসাথে থেকেও কারো সাথে কারো বন্ধন তৈরি হয় না। আবার স্বল্প পরিসরে কেউ হয়ে উঠে বিশেষ কেউ। আবার হৃদয়ও ভাঙ্গে উপযুক্ত মূল্যায়নটুকু না পেয়ে। মূল্যায়ন পেতে-নিজ ওজন, অবস্থান, গুণমানেরও দরকার হয়। বুঝতে হবে কে কার কাছে কতটা মূল্যবান। ঘরের সঙ্গী-আজীবনের চুক্তি, বৈধতার দলিল। বাইরের সঙ্গী-টাইমপাস, ক্ষণিকের মোহ, কাগজে অবৈধ। বৈধ কাগজ থাকলে আমেরিকায় যে কোনো সুবিধা পাওয়া যায়। নিজ অধিকারে মামলা করা যায়। অবৈধ হলে গাড়ি দুর্ঘটনায় আপনার পা কাটা গেলেও কোনো ক্ষতিপূরণ, সুবিধা পাবেন না। সম্পর্কের বেলায়ও অধিকারের বিষয়টি যখন আসে, বুঝতে হবে কে ঘরের আর কে বাইরের।
তারপরও কোনো না কোনো শূন্যস্থান থেকেই আমাদের অন্যের প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয়। কারো প্রতি ভালো লাগা তৈরি হতেই পারে। তবে সেই ভালোলাগাটুকু যদি সেখানেই ধরে রাখা যায়, তবেই সব ঠিকঠাক মতো চলে। গভীরে জড়াতে গেলেই ব্যক্তি ও সমাজের জন্য সমস্যা বাড়ে।
এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে একসময় অস্বস্তিবোধ হতো। এখন বয়সের সাথে উপলদ্ধি ও ভাবনা বিস্তৃতি লাভ করছে। তাই প্রতিটা ঘটনার পিছনেই কারণ ও যুক্তি খুঁজে পাই। এখন একজন খুনিকে কেবল অপরাধী ভেবেই ঘৃণা করি না, বরং তার অপরাধী হয়ে উঠার পিছনের নির্মম শৈশব-কৈশোরের অভিজ্ঞতা ভেবে দুঃখীও হই। সময়ের সাথে জীবন নানা অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের জ্ঞানকে আরো প্রসারিত করে, মজবুত করে। আমরা উপলদ্ধি করতে শিখি ছোট বড়ো চারপাশে ঘটে যাওয়া সবকিছু।
তারপরও আমাদের ভুল হয়। আমরা ভুল করে ফেলি। কোনো কিছুর প্রতি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়ি যা সারাজীবন পিছু ছাড়ে না।
পরিবার তো পরিবারই। একেই যত্নের সাথে ধরে রাখা দরকার।
Leave a Reply