মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

ডিসির হস্তক্ষেপ,তিন দফায় স্টাইল ক্রাফটস কারখানা শ্রমিকরা বেতন বোনাস পাবেন

ডিসির হস্তক্ষেপ,তিন দফায় স্টাইল ক্রাফটস কারখানা শ্রমিকরা বেতন বোনাস পাবেন

ডিসির হস্তক্ষেপে
৩ ধাপে বকেয়া বেতন- বোনাস পাবেন স্টাইল ক্রাফট কারখানার শ্রমিকরা

নাজমুল হাসান (গাজীপুর):
মহানগরীর সদর থানাধীন তিন সড়ক এলাকায় ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকরা জেলা প্রশাসকের মধ্যস্ততায় ৩ ধাপে বেতন ও বোনাস দিতে রাজি হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মালিক ও শ্রমিক পক্ষকে নিয়ে জেলা ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন তিন সড়ক এলাকায় স্টাইলক্রাফট নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ৩ হাজারের মত শ্রমিক কাজ করে। মালিকপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে স্টাইলক্রাফট নামের তৈরি পোশাক কারখানাটিত কয়েক মাস পরপরই বেতন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। শ্রমিকদের জুন, জুলাই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাওনা রয়েছে। গত ২৬ জুলাই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে মালিক পক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ আগষ্ট তাদের বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মালিক পক্ষ এক তারিখে বেতন পরিশোধ না করে কারখানা থেকে চলে যায়।

একারণে গত বুধবার সকালে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়ক অবরোধ করে কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিক। পরে শ্রমিকদের সমস্যাটি জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের নজরে আসলে তিনি সমস্যাটি সমাধান করে শ্রমিকদের পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে দুই ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করে তারা।

এদিকে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা (বুধবার)অবরোধ প্রত্যাহার করে বাড়ী ফিরে গেলেও বৃহস্পতিবার (৩আগষ্ট) সকালে কয়েক হাজার শ্রমিক মিছিল নিয়ে গাজীপুরের রাজবাড়ীতে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জমায়েত হয়েছে। এসময় তারা তাদের পাওনা বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের টাকা পরিশোধেরে দাবী জানান।

পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মালিক ও শ্রমিক পক্ষকে নিয়ে জেলা ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট মো. হুমায়ুন কবীর, সহকারী কমিশনার ও সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট মো: শোয়েব শাত ইল ইভান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক আহমেদ বেলাল, সহকারী মহাপরিদর্শক মো. মোতালেব মিয়া, শ্রম পরিদর্শক রুমেনুল হক, শিল্প পুলিশ, মেট্টো পুলিশ প্রতিনিধি এবং মালিক ও শ্রমিক পক্ষ।

সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৭ আগষ্ট জুন মাসের বেতন, ২০ আগষ্ট ঈদ বোনাস এবং ৩০ আগষ্ট জুলাই মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক আহেমেদ বেলাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, সিদ্ধান্ত জানার পর শ্রমিকরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্ত্বর ত্যাগ করে।

শ্রমিকরা জানায়, কারখানাটিতে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকদের জুন, জুলাই মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে গত ২৬ জুলাই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে মালিক পক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী গত ১ আগষ্ট তাদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মালিক পক্ষ ওই তারিখে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করেনি। গত বুধবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করতে এসে গেটে কারখানায় বন্ধের নোটিশ দেখতে পায়। পরে শ্রমিকরা ঢাকা-জয়দেবপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। খবর পেয়ে মহানগর ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. রেজাউল সাংবাদিকদের করিম বলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার মালিকের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ আগষ্ট জুন মাসের বেতন ও ৮ আগষ্ট শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেয়ার কথা। মালিক পক্ষ বেতন বোনাস পরিশোধ না করেই কারখানা ছয় দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। বুধবার সকালে বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আস্বাস দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে। পরে চলাচল স্বাভাবিক হয়।
#####

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD