সাইন্স বি থেকে – সায়মন সমির
‘আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগে ৩৩ হাজার ভোল্টের এক ভয়ংকর এক্সিডেন্টে আমার শরীরের ৪৩ শতাংশই পুড়ে যায়। শুধুমাত্র আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি। ডক্টর এ-ও বলেছিলেন যে আমি বাঁ’চবোনা!’
সেদিন ছিলো বৃষ্টির দিন আবহাওয়া বেশ সুন্দর। ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া! ছাদে হাঁটছিলাম… হাঁটতে হাঁটতে ছাদের পাশে রড ছিলো, তা ধরেই দাঁড়ালাম। ছাদের পাশেই ছিলো ১১ হাজার করে ৩৩ হাজার ভোল্টের ৩ টা তার। গুড়ো গুড়ো বৃষ্টি পড়ছিলো, আমি লক্ষ্য করলাম বৃষ্টির ফোটাগুলো যখন তারে পরছিলো তা নিমিষেই বাষ্পীভূত হয়ে যাচ্ছিলো!
হঠাৎ হাত বাড়িয়ে দিলাম তারের দিকে! জানিনা কি ভেবে আমি তারের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম! আমি ইচ্ছে করে করিনি এমনটা!
প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে আমি কিছু একটা করে ফেলেছি, আমার সাথে কিছু একটা ঘটছে! তারপর দেখলাম আমি উড়ে যাচ্ছি, খুবই ধীর গতিতে! সময় যেন থেমেই গেলো! আমি তখন ভাবছিলাম আমি মারা যাচ্ছি আর এখনি হয়তো আজরাইল আঃ আমার সামনে হাজির হবেন! আল্লাহর কাছে সব কিছুর জন্য ক্ষমা চাচ্ছি, তখন আবার মনে পড়ল, মৃত্যু যখন চলে আসে তখন তো আল্লাহ কোন তাওবা কবুল করেন না! তারপর আবার ভাবলাম, আমি বুঝি মারাই গেলাম!
আমি তখনও জানিনা যে আসলে আমি কারেন্টেই শক খেয়েছি, আমি ভেবেছিলাম আমার আত্মা কবজ করে নিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত মানুষ হয়তো এভাবেই মৃত্যুবরণ করেন, এটাই ছিলো আমার ধারণা। আমার কাছে সব কিছু স্লো লাগছিলো। এত্তসব চিন্তা-ভাবনা কয়েক মুহুর্তেরই। তারপর হঠাৎ ছাদের এক পাশে গিয়ে পড়লাম।
আমার মাথা এবং হাত বাহিরেই ঝুলছে। আগুনের স্পার্ক নিচে পড়ছে! ইতোমধ্যে অনেক মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছে। তাদের চিৎকার চেঁচামেচি আমার কানে অন্যরকমভাবে আঘাত করছে! তাদের চেঁচামেচির শব্দ আমি সহ্য করতে পারছিলাম না!
শব্দগুলো যেন আমার কানে লোহার মত আঘাত করছে! সেই অনুভুতিটা বুঝানোর মত কোন ভাষা-শব্দ আমার জানা নেই! ইন দ্যা মিনটাইম আমার শরীর পুড়ে যাচ্ছে! আমার আর কিছু মনে নেই! পরবর্তীতে সবার কাছ থেকে শুনেছি; নিচ থেকে দু’জন মহানায়ক এসে নাকি হাজির হয় সেখানে। তাঁরা আমার শরীর কিছু একটা দিয়ে ঢেকে দেয়, এন্ড দেন তারা আমার পা ধরে টেনে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়!
পায়ের চামড়া কেটে শরীরের ৩টি অংশে লাগানো হয়েছে! যতটুকু প্যান্ট পড়া ছিলাম ততটুকু পুড়েনি, মানে নাভীর নিচ থেকে পুড়েনি। গলার উপরে অর্থাৎ মুখে কোন রকম দাগ লাগেনি, কিচ্ছু হয়নি! আমার আল্লাহর কি রহমত আমার উপর! তিনি আমাকে বাঁচালেন এবং আমার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোও বাঁচালেন।
দু’দিন আগে আমি এই বিষয়ে পোস্ট করেছিলাম এবং প্রশ্ন করেছিলাম যে, “৩৩ হাজার ভোল্টের মত কারেন্টে শক খেলে কি মৃ’ত্যু প্রায় অবস্থায় কেউ ব্যাথা অনুভব করতে পারে? মানুষ যখন কারেন্টে শক খায় (আমি সাধারণ কোন শকের কথা বলছিনা) তখন কি সব কিছু স্লো দেখতে পায়? যদি এমনটাই হয় তবে কেন? এই ব্যাপারে কি বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখ্যা রয়েছে?”
Leave a Reply