ইউক্রেনের কবিতা
********
সে বললো আমাদের বিল্ডিঙে যথাযথো বেইসমেন্ট নাই
মূল:আনাশতাসিয়া আফানাসিয়েভা
অনুবাদ:ইউসুফ রেজা
(আনাশতাসিয়া আফানাসিয়েভার জন্ম খারকিভে ১৯৮২ সালে।ছয়টি কাব্যগ্রন্থ আছে।বিভিন্ন ভাষায় তার কবিতা অনুদিত হয়েছে।ইউক্রেন ও রাশিয়ায় সম্মাননা পেয়েছেন।সম্প্রতি আমেরিকায় জোসেফ ব্রডস্কি/স্টিফেন স্পেন্সার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন।)
সে বললো
আমাদের বিল্ডিঙে যথাযথো বেইসমেন্ট বা পরিখাও নাই
এ জায়গা ছেড়ে দিতে হলো,এখানে কেউ লুকাতে পারবে না
সাত দিনও থাকতে পারিনি পুরুষেরা
গুতো দিয়ে বের করে দিলো
আমরা অবলা আমাদের জায়গা কোথায়
কিছুদিন আগেও আমরা ঘর সাজাতে চাইতাম
রুমগুলো গুছিয়ে রাখতে মনোযোগী হতাম
লুকানো গর্তে বসে মনে করতেছি
আমাদের বেইসমেন্ট কাজে আসবে না
এখানে আমরা বাঁচবো না মাথার উপরে সব ভেঙে পড়বে
খোলা মাঠে থাকার চেয়ে এটা ভীতিকর
আমাদের বিছানা বালিশ ফ্লোরে নামিয়ে নিয়েছি
যাতে করে গোলাগুলি শুরু হলে শুয়ে পড়া যায়
আমরা সবাই ফ্লোরে শুয়েই ছিলাম
আমার স্বামীর জায়গা পুরানো বাসায়
কাউকে না কাউকে তো থাকতেই হয়
তা না হলে ফিরে এসে কিছুই পাবো না
ফিরে আসা হবে কিনা তাও জানা নাই
সে আমাদের ঘর দেখে রাখতেছে
তাই বাড়ি ঘরে চুরি কিংবা লুট হচ্ছে না
মাঝে মাঝে উপরের থেকে উনি টেলিফোন করে
সেখানে সে জাদুবলে সম্ভাষণ পায়
অল্প কথা বলেই সে ফোন রেখে দেয়
এখনও রয়েছি বেঁচে আবার ফোন করবো আসছে শনিবার
যখন মর্টার নিয়ে লরি চলে যায়
আমরা জিজ্ঞাসা করি না তোমরা কোন দলে
গাড়ির আওয়াজ এলে নিচে শুয়ে পড়ি
আমাদের পথে-ঘাটে যারা বাইরে তারাও শুয়ে পড়ে
বুলেট কানের পাশে শিস দিয়ে যায়
একটা পোটলা নিয়ে এখানে এসেছি
পর্যাপ্ত জায়গা নেই মানুষ থাকার
নারীরা নিম্নস্বরে কান্না করছে
আগস্ট মাসের হাওয়া সানাই বাজায়
হেথা নয় হোথা নয় অন্যখানে যাও
আমার পাশেই যারা গতবছরের শুকনো বরই খাচ্ছে
আমাদের ফসল ও পাকা ফল ধ্বংস হয়ে গেছে
কোথায় বেহেশত আর কোথায় দোজখ
ছোট কালে নানীর গল্পে শুনেছি কিন্ত জানা নাই
মিনিভ্যান চেপে যদি অজানায় রওয়ানাও দিই
অনিশ্চিত পথে হয়তো জানা হয়ে যাবে
যেখানে শুকনো খাবার নীরবে পোটলায় থাকে
কত লোক মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে
এবং আমরা মৃত্যুর পরে এর স্বাদ নিয়ে থাকি
Leave a Reply