গুয়াহাটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ট্রেড এক্সপো-র উদ্যোগ
সামরিক প্রসঙ্গ, সিলেট, ৩০ এপ্রিল : সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাক্টি’র উদ্যোগে রবিবার ভারতের অসমের রাজধানী ওয়াহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার রুহুল আমিনের সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
সভায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার রুহুল আমিন বলেন, ভারতের সেভেন সিস্টারে বাংলাদেশী পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এসব রাজ্যের শিল্পখাতে বেশি উন্নত না হওয়ায় তাদের প্রচুর পরিমাণ পণ্য দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকে আমদানী করতে হয়। সিলেট থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এসব রাজ্যে পণ্য রফতানির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, গুয়াহাটি-ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান শহর। আমরা হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সেখানে বাংলাদেশী পণ্যের ট্রেড এক্সপো আয়োজনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। যার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশী পণ্যকে সেখানে ব্রান্ডিং করতে পারবো। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে গার্মেন্টস, প্লাস্টিক পণ্য, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি ভারতের সেভেন সিস্টারে রফতানি হচ্ছে। এ রফতানি বৃদ্ধির জন্য আমাদের মানসম্পন্ন পণ্য তৈরির মাধ্যমে ‘ইমেইজ বিল্ডিং’ করতে হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে পর্য
টন সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য আমরা ঢাকা-গুয়াহাটি বা সিলেট গুয়াহাটির বিমান পরিসেবা চালুর লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এছাড়াও গুয়াহাটি-শিলং-সিলেট বাস সার্ভিস চালু হলে সিলেটে ভারতীয় পর্যটক আগমন বাড়বে। তিনি বলেন, নর্থ-ইস্ট এর আসাম-নাগাল্যান্ড ও মিজোরামের অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী রয়েছেন, সহকারী হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় তাদের সিলেটে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সভায় সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে সিলেট জেলা ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদল ভারতে অনুষ্ঠিত অনেকগুলো ব্যবসায়ী সম্মেলন ও বায়ার-সেলার মিট-এ যোগদান করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রফতানি নিতান্তই কম। উদাহরণস্বরূপ গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৬১৯ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য এবং রফতানি হয়েছে মাত্র ২০০ কোটি ডলারের পণ্য, অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলার। এই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ করে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সমতা আনতে তিনি সহকারী হাইকমিশনের পক্ষ থেকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি আমদানি-রফতানি বৃদ্ধিতে জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ সীমান্তে কুশিয়ারা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ, ভোলাগঞ্জ এলসি স্টেশনে ইমিগ্রেশন সিস্টেম চালু, মেঘালয়ের কয়লা আসামের সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির অনুমতি এবং সিলেটে উৎপাদিত ফলমূল ও শাক-সবজি ভারতে রফতানির সুযোগ প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার অনুরোধ জানান।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলি আহমদ, সহ সভাপতি মোঃ আতিক হোসেন, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, আলীমুল এহছান চৌধুরী, সারোয়ার হোসেন ছেদু, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী রাজিব, কাজী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সহ সভাপতি মোঃ এমদাদ হোসেন, সহকারী হাইকমিশনের ট্রেড অফিসার আজহারুল আলম, সিলেট চেম্বারের সদস্য এস. এম. শায়েস্তা তালুকদার, সিলেট-শিলচর মৈত্রীর সেক্রেটারি লেখক প্রকাশক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল, মোঃ জহির হোসেন, হুমায়ুন কবির লিটন, সচিব মোঃ গোলাম আক্তার ফারুক, সিলেট প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি আব্দুল কাদের তাপাদার, জৈন্তা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম, অনলাইন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ গোলজার আহমদ, সিলেট চেম্বারের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
Leave a Reply