মনে পড়ে
অমল মুখোপাধ্যায়কে?
সঙ্গীত ভূবণে একটি বিস্মৃত নাম অমল মুখোপাধ্যায়।
তিনি তাঁর যুগে মনে রাখার মতো কিছু গান করে গেছেন, তা ভুলে যাওয়ার নয়।
তাঁর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গান ছিল –
১.
চুপ চুপ লক্ষ্মীটি শুনবে যদি গল্পটি,
এক যে ছিল তোমার মতোই ছোট্ট রাজকুমার।
একদিন কী করল শেষে, ঝকঝকিয়ে যুদ্ধবেশে
পাড়ি দিল চুপটি করে পথে অজানার।
তেপান্তরের মাঠ ছাড়িয়ে সাত সাগরের কূল পেরিয়ে
থামল শেষে ঘুমের দেশে রাজপক্ষী তার –
যেথা ফুলপরি পাখনা মেলে যায় ভেসে বাতাস ফেলে
নাম -না জানা পাখি কত ডাকে অনিবার।
সেই সে দেশে স্বপনপুরে রাজকন্যে ঘুমের ঘোরে,
ঘুমিয়ে ছিল ফুলের উপর দেখল রূপকুমার।
চুপটি করে অলসভরে কুমার ডেকে তুলছে তারে –
রূপবতী পরিয়ে দিল বরণমালা তার।
শেষ হল ওই গল্পটি, ঘুমোও এবার দুষ্টুটি,
বলবো তোমায় গল্প আমি কালকে আবার।
২.
টগবগ টগবগ টগবগ ঘোড়া ছুটিয়ে,
ঝিলমিল ঝিলমিল ঝিলমিল ঝিলমিল নিশান উড়িয়ে।
ছোট্ট খোকন যাচ্ছে, হাতে খোলা তলোয়ার –
দৈত্য দানব যত আছ সবাই হুঁশিয়ার।
রূপবতী রাজকন্যে বন্দী যেখানে
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে চলছে সেখানে,
লক্ষ দানব দিনে রাতে আছে পাহারায়,
তাদের সাথে যুদ্ধ করে মানবে না সে হার।
স্বপ্নে দেখা কোথায় সে যে ছিল অজানা
সোনার দাঁড়ে হীরের পাখি দিল ঠিকানা।
যেই না খোকন হাজির হল ঘোড়ার পিঠে চড়ে,
লক্ষ দানব ছুটে এল মারতে তাকে ঘিরে।
এক এক করে মেরে তাদের তলোয়ারের ঘায়
বন্দিনী সেই রাজকন্যে করল সে উদ্ধার।
৩.
পদ্মদিঘির ধারে ধারে, ডাহুক ডাকা মাঠের পারে, কানামাছি খেলার কথা যায় কি ভোলা?
মনে আজ সেই ভাবনা দেয় দোলা।
ফেলে আসা মেঠো পথের বাঁকে
ছই -লাগানো গরুর গাড়ি এখনো হাত়ছানিতে ডাকে।
মন আমার হাত বাড়িয়ে যায় হারিয়ে
দেখে ওই দূরের আকাশ খোলা।
সারাদিন ঝিলের জলে মাছরাঙাদের সাথে
পাল্লা দিয়ে মাছ ধরেছি কত –
আজকে হারানো সেই স্মৃতিগুলো
চোখের জলে ঝাপসা হয়ে ভাসছে অবিরত।
মনে পড়ে পাঠশালাতে যেতে
যাত্রাগানের খবর পেয়ে গিয়েছি সেই আসরে মেতে।
কতবার চোখ এড়িয়ে গাঙ পেরিয়ে
পেয়েছি নৌকোটি পাল তোলা।
এই তিনটি গান তিনি গেয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে।
লিয়াকত হোসেন খোকন
রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
Leave a Reply