নরসিংদীর বেলাবোতে নিরীহ বাউল ফকিরের উপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক।
গত ০৭ মে ২০২৩ রোজ: রবিবার, সময়: দুপুর ২:৩০ মিনিট নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার বাবলা স্টিল ব্রীজ সংলগ্ন পুলকিত আশ্রমে কিছু দুষ্কৃতিকারীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হামলা করে সাধক খোকন চিশতী ও বাউল রিয়াদুল্লা ভূঁইয়াকে মারধর করে দোতারা,সারিন্দা,একতারা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।ফলে সুধী সমাজে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।দুস্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন সুধীসমাজ।
জানাগেছে,সারা দেশে এ আশ্রমের রয়েছে পরিচিতি।দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু, ফকির, বাউল শিল্পীরা এ আশ্রমে যান। সেখানে সাধন ভজন করেন।গতকাল বিকালেও চলছিলো তাদের কার্যক্রম। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রথমে আশ্রমে আসেন এক মদ্যপ।সে উল্টা-পাল্টা বকাঝকা করতে থাকে সবাইকে।এলাকার বাইরে থেকে আসা শিল্পীরা তাকে থামানোর চেষ্টা করেন।কিন্তু হামলাকারী মদ্যপ অনুষ্ঠান ভন্ডুল করে দিতে চায়। আগত শিল্পীরা বলতে থাকে -“আমরা আপনাকে চিনি না, আপনিও আমাদের চেনেন না৷ আপনার সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।দয়া করে আমাদের সাধনার ক্ষতি করবেন না।আমরা কারো ক্ষতি করি না।”এভাবে শিল্পীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে শান্ত না হয়ে দলবলকে জড়ো করতে থাকে। এক পর্যায়ে অন্য দুষ্কৃতিকারীদের নিয়ে হামলা চালায় আশ্রমে। সাধু, ফকির, বাউল সাধকরা তাদের কাছে আকুতি মিনতি করতে থাকেন। হামলা থামাতে বলেন। কিন্তু কিন্তু হামলাকারীরা তাতেও থামেনি। বাউল শিল্পী খোকন চিশতীর সারিন্দা (তানপুরা), দোতারা, শিল্পী রিয়াদ উল্লাহ ভুঁইয়ার একতারা, ডুগিসহ উপস্থিত আরো শিল্পীদের বাঁশি, তবলা, হারমোনিয়াম এবং আশ্রমের সমস্ত কিছু ভেঙ্গে দিয়ে চলে যায় তারা। এ সময় কয়েকজন শিল্পীকে মারধর করে তারা।
জীবনের সব ছেড়ে যারা গান বেছে নিয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে এবার কেড়ে নেওয়া হয়েছে শেষ সম্বল৷ তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে রাস্তায়। যন্ত্র ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
বিবেকবানদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে -এই দেশে কী কেউ কবিতা করতে পারবেন না। করতে পারবেন না গান, সিনেমা, আঁকাআঁকিও। যেদিকে তাকাবেন দেখবেন শুধু অদৃশ্য ‘না’। কখনও ধর্ম, কখনও রাজনীতি বা কখনও শুধু বাহুর জোরে ভর করে হাজির হয় এই ‘না’।
এক্ষেত্রে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। সংস্কৃতি ও মানবতার ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ খুব জরুরি।
Leave a Reply