চিন্তানায়ক হাসনাইন সাজ্জাদী
নিল হাসান
।।
বাংলা সাহিত্যে বড়োজোর শত বছরে দু-এক জন মহানসত্তা জন্মগ্রহণ করেন।যাদের হাতে সাহিত্যের বাঁকবদল ঘটে।
বিজ্ঞানকবি হাসনাইন সাজ্জাদী এননই এক সত্তা।যাকে বলা যায় বাংলা কাব্যের অপরাজেয়
যৌবনশক্তির প্রতিমূর্তি।
তিনি মৌলিক গবেষণা করেছেন পৃথিবীর
ইতিহাসের বিভিন্ন যুগ,বিভিন্ন সংস্কৃতি বা
সভ্যতা নিয়ে আর প্রত্যেক ক্ষেত্রে সৃষ্টি
করেছেন নতুন নতুন চিন্তাধারা।
ইতিহাস, দর্শন, নৃতত্ত্ব, ধনবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, সমাজশাস্ত্র, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সাহিত্য, সুকুমার শিল্প ইত্যাদি বিচিত্র বিষয়ে নতুন নতুন মত-পথ খাড়া করেছেন।লিখেছেন “সভ্যতা পুঁজিতন্ত্র ও বিজ্ঞানবাদ” এবং “বিজ্ঞানবাদ রাষ্ট্রদর্শন”।
বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত ছাড়াও ফরাসি,জাপানি, জার্মান এবং ইতালি সাহিত্যের রস নিয়ে তাঁর অসামান্য সৃষ্টি ‘বিজ্ঞানকাব্যতত্ত্ব,বিজ্ঞানশিল্পতত্ত্ব,কবিতাবিজ্ঞান ও সাবলীল ছন্দ।
তাঁর বিরাট সৃষ্টির মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে
এক ঐক্যবদ্ধ জীবন-দর্শন বিজ্ঞানবাদ।
বস্তুনিষ্ঠ দুনিয়া পর্যালোচনার নিরেট বাস্তব
ভিত্তির ওপর হাসনাইন সাজ্জাদী’র চিন্তা অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র।
হাসনাইন সাজ্জাদী’র চিন্তাধারাকে দার্শনিক পরিভাষায়
বলা হয় ‘বিজ্ঞানবাদ’— ইংরেজিতে ‘সাইন্টিজম’।
তিনি মামুলি ও গতানুগতিক চিন্তাস্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটতে ভালোবাসেন,
সাহিত্য সংস্কৃতিতে নিঃসঙ্গ অবস্থায়ও প্রয়োজনবোধে তিনি স্বকীয় পথে চলেন।তবুও তিনি আপোষ করেন না।চুপ থাকেন কিন্তু বিজ্ঞানমনস্কতা ছাড়েন না।
চলা-পথে চলা সাধারণ মানুষের অভ্যাস।
অচল পথে চলা প্রতিভার লক্ষণ।তাই হাসনাইন সাজ্জাদী।
অপরের চশমা পরে নয়, নিজের চোখ দিয়ে তিনি জীবনকে দেখেছেন এবং তথ্য ও যুক্তি দিয়ে গড়ে তুলেছেন এক শৃঙ্খলানিষ্ট চিন্তার পঠন।
‘ঐতিহ্য পরম্পরায় বাংলা কবিতা”
বইটি মহামূল্যবান গ্রন্থ।গোটা ‘বাংলাসাহিত্যের ছবি
তো বটেই বিশ্বসাহিত্যেরও তিনি পথ প্রদর্শক। সবচেয়ে দামী বৈশিষ্ট্য হলো
বিশ্বসাহিত্যের সম্পদ হিসেবে প্রবর্তিত বাঁকবদলগুলো নিয়েও কথা বলেছেন তিনি উপরোল্লিখিত গ্রন্থে।তাঁর চিন্তার ব্যাপ্তি,গভীরতা,
সাহস, স্বকীয়তা ও সর্বজনীন গুরুত্ব আজ অস্বীকার করার উপায় নেই।
আশ্চর্য এক বিজ্ঞানকবিতার রূপকারকে
বাংলা সাহিত্যের পাঠক, লেখক এবং চিন্তক
সঠিক মূল্যায়ন করবে একদিন হয়তো!
Leave a Reply