কুলাউড়ার লুফ কাহিনি
।।
মাত্র ত্রিশ বছর আগের কাহিনি।কুলাউড়ায় ঢাকা প্রবাসী আমার এক চাচি মৌলভীবাজার থেকে বাসে গিয়ে নেমেছেন।যাবেন জুড়ী। যাবেন জুড়ীতে আমির মঞ্জিলে। আমার দাদি বৃদ্ধ মানুষ।সকল খাবার গলা দিয়ে নামে না উনার।চাচি ভাবলেন উনার জন্য ব্রেড নিয়ে যাই।ঘরে মহিষের তখন বালতি ভরা দুধ।কনফেকশনারি দোকানের পর দোকান খুঁজে চলেছেন ব্রেড।কোনো দোকানিই স্বীকার করছে না।সবাই বলছে না ব্রেড নাই।শেষ দোকান থেকেও একই জবাব পেলেন।হতাশায় মনটা ভারি হয়ে উঠলো।প্রাচীন থানা শহর কুলাউড়া।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ আন্দোলন।সিলেট বিভাগের মধ্যে কুলাউড়া ছিল প্রাণকেন্দ্র।এমনকি সিলেটের নাগরিলিপি সাহিত্যের প্রাণকেন্দ্রও এই কুলাউড়া।সকল জনপ্রিয় নাগরি পুথিকাররা ছিলেন এ কুলাউড়ার অধিবাসী।জেনারেল ওসমানী আজম বোর্ডিং এর দোতলায় দাঁড়িয়ে সমবেত জনতার উদ্দ্যেশ্যে সাত মার্চের দু’দিন পর ঘোষণা দিয়েছিলেন যে বাংলাদেশ কার্যতঃ বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণের পর স্বাধীন হয়ে গেছে।এখন এ স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আমাদেরকে যুদ্ধ করতে হতে পারে।কুলাউড়াবাসী এই ভাষণ গ্রহনের জন্য প্রস্তুত ছিল বলে তিনি তা করেছিলেন। মূলত রেল জংশন থাকার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল ছিল বলে ঢাকা থেকে নেতারা কুলাউড়া এসে নামতেন।আজম বোর্ডিং এ ছিল আওয়ামী নেতাদের থাকা খাওয়া ফ্রি।
সে প্রাগ্রসর কুলাউড়ায় ব্রেড পাওয়া যায় না!কী সাংঘাতিক ব্যাপার। বিফল মনোরথে তিনি যখন ফিরে যাবেন তখন চোখ পড়লো তাকে সাজিয়ে রাখা ব্রেডের ওপর।বললেন এটা কী?
জবাব দিল দোকানি এটা লোফ।
তিনি বললেন এই লুফই খুঁজছি।এটা দিন।আরে-বলে দোকানি হেসে দিল।আজ কুলাউড়ায় নিশ্চয় লুফ চাইলে বাঁকা চোখে তাকাবে দোকানদার…
Leave a Reply