শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৩ অপরাহ্ন

ঔপন্যাসিক আরিফ মঈনুদ্দীনের উপন্যাস প্রসঙ্গ – ফকির মুহব্বত শাহ্

ঔপন্যাসিক আরিফ মঈনুদ্দীনের উপন্যাস প্রসঙ্গ – ফকির মুহব্বত শাহ্

ঔপন্যাসিক

ঔপন্যাসিক আরিফ মঈনুদ্দীনের
উপন্যাস প্রসঙ্গ

ফকির মুহব্বত শাহ্

উপন্যাস শ্রব্য বা পাঠ্য, কথাসাহিত্যের অপরাপর শাখার মধ্যে সম্ভবত উপন্যাসের মধ্য দিয়ে একজন লেখক নিজের ভূও দর্শন, অন্তর দর্শন প্রতিফলিত করে থাকেন। গ্রন্থ সংখ্যা দিয়ে একজন লেখককে বিচার করা সমীচীন নয় ঠিকই; তবে সাহিত্যযজ্ঞের সুবিশাল সমুদ্র প্রমান বিস্তারে একজন প্রকৃত লেখককে খুঁজে পেতে হলে তাঁর কর্ম পরিচয়ও বিবেচ্য বিষয়। পেশাগত জীবনে একজন উর্ধ্বতম ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও সময় সমান্তরালে লেখালেখি চালিয়ে যাওয়া, তা-ও কাব্য- কবিতা, গল্প- উপন্যাস সহ সাহিত্যের একাধিক শাখা ও বিষয় নিয়ে চাট্টিখানি কথা নয়। কাব্যগ্রন্থ, গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস নিয়ে তাঁর সৃষ্টি কর্মের সংখ্যা ২২ টির মতো হবে। তাঁর সৃষ্টি সংখ্যা দিয়েও তাঁর সাহিত্য নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও মনীষার পরিচয় পাওয়া যায়। এক জীবনে আটটি উপন্যাস লেখা অতো সহজ ব্যাপার নয়। সাহিত্যের বিশাল বিত্ত বৈভবের মধ্যে,” মহাকাব্যের ” পরেই উপন্যাসের স্থান। উপন্যাস লেখককে একজন কবির মতোই জীবনের ভেতর জীবনে অবগাহন করে তবেই পাড়ি জমাতে হয় এ সাম্রাজ্যে। আরিফ মঈনুদ্দীন জীবনের পাঠ নিয়েই তাঁর দেখা জগৎ জীবনের অন্তর্ভেদী রহস্য উম্মোচনে উদ্যোগি হয়েছেন। আর তাতে তিনি পারঙ্গমতা দেখাতে পেরেছেন তাঁর প্রকৃত প্রমাণ ” আকাশ ছুয়েছে মন “– উপন্যাসের পরিস্ফুটন। ২০০৯ সালে বইমেলায় — প্রকাশিত উপন্যাসটি ২০১৭ এর মধ্যে ষষ্ঠ মুদ্রণ হয়! আসলে আমরা যারা লেখালেখি করি, তারা মানুষের কাছে যাওয়ার মতো সম্ভার সৃষ্টি বা তৈরি করতে পারি না বলেই
পাঠক সাহিত্য বিমুখ – প্রযুক্তি নয়।

উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণ হলো রম্যময়তা। সে রম্যময়তা আদি রস থেকে শুরু করে বাৎসল্য রস হয়ে অনানুসঙ্গিক রস পরিবেশন ও ঔপন্যাসিক প্রবাহমান করার স্বাধীনতা রাখেন আর তাতে যে লেখক যতো শক্তিমান – তিনি ততোবেশী সফল লেখক। “আকাশ ছুয়েছে মন” উপন্যাসে নায়ক আশিক রহমানের কলিগদের নায়িকা ফারহানা ও তার বান্ধবী জেরিন সম্পর্কিত উৎসুক্য ও রসআলাপ যথেষ্ট রোমান্টিকতার সৃষ্টি করেছে। স্বার্থক উপন্যাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তার গাঁথুনি, গতিময়তা ও প্রবাহমানতা এবং ভাষাশৈলি। – এ ক্ষেত্রে আরিফ মঈনুদ্দীন যথেষ্ট মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছেন এ উপন্যাসে। উপন্যাসে নাটকীয়তা আরোপ– উপন্যাসকে শক্ত ভীতের উপর দাঁড় করায়। নায়িকা ফারহানার সাথে নায়ক আশিক রহমানের পরিচয় ও কথোপকথন নাটকীয় আবহসৃষ্টির আলামত। উপন্যাসে বেশ কিছু জাগায় এ আবহ বিদ্যমান আর তা উপন্যাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে — তাতে উপন্যাসটি আরো মনোগ্রাহী হয়ে ওঠেছে। সহনায়ক লালন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নায়িকার জীবনে আঠার মতো লেগে রয়েছে একান্ত, স্বীয় বিশ্বাসে অটল থেকে সফল কার্য হয়েছে– উপন্যাসের পৃর্ণতা প্রাপ্তিতে তা যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। সব কিছু মিলে উপন্যাসটি একটি স্বার্থক উপন্যাসের অবয়ব পেয়েছে– আর তা- ই লেখকের অন্যতম কীর্তি।
ভাষা প্রসঙ্গে বলবো, ঔপন্যাসিক অত্যন্ত শক্তিমান লেখক এবং তাঁর ভাষাজ্ঞান ও প্রাজ্ঞতায় তিনি সমৃদ্ধ।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD