এখন বিজ্ঞান কবিতার কাল
শামসুর রাহমান আধুনিকতার হাল
হাসনাইন সাজ্জাদী
।।
কবি শামসুর রাহমান।আধুনিক নাগরিক কবি।সমগ্র বাংলাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি।তাকে এড়িয়ে যাবার মানসিকতা মানেই মুর্খতা।আধুনিকতা না জানা।আমাদেরকে ভাবতে হবে বাংলাসাহিত্যে তার মতো সৌভাগ্যবান ও আলোকিত কবি আর একজনও এত প্রাসঙ্গিকভাবে নেই।বাংলার রূপ বর্ননা করেছেন জীবনানন্দ আর আন্দোলন সংগ্রামে বাঙালির পাশেতো তিনিই।তিনিতো সেই যিনি স্বৈরাচার বিরোধিতা,নূর হোসেন,ডা.মিলন,স্বাধীনতা প্রভৃতির কবিতা লিখে আমাদের মৌলিক জায়গায় বসে আছেন।পদ্য থেকে কবিতাকে বের করে এনেছেন।কবিদেরকে নগর চিনিয়েছেন।কিন্তু তাকে হিংসা করে পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশের লোকজ কবিরা।তারা লোকজ কবিতাকে বলে আধুনিক কবিতা।আর খাঁটি আধুনিক তথা নাগরিক কবিকে করে অবজ্ঞা। কলকাতার প্রগতিশীল কবিদের মধ্যেও শামসুর রাহমান বিরোধিতা আছে।এটা প্রতিহিংসা থেকে।সাম্প্রতিক আলোচিত আধুনিক কবিতার বিষয়টি সে কারণেই।এরা জানে না মৌলিকত্ব নিয়ে কথা বললে আধুনিক কবির তালিকায় শামসুর রাহমানের নাম থাকবেই।তারা যতই তাঁকে এড়িয়ে যাক তাতে কিছু যায় আসে না।এ অবস্থা ছিল জীবনানন্দ দাসের ক্ষেত্রে।তিনিও তার সময়ের আধুনিক ছিলেন।প্রথম দিকের আধুনিক মাইকেল মধুসূদন,দ্বিতীয় পর্বের আধুনিকদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল,বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত,জীবনানন্দ দাস,তৃতীয় পর্বের বাংলাদেশের কবি শামসুর রাহমান,চতুর্থ এবং শেষ পর্বের আধুনিকদের মধ্যে বাংলাদেশের কবি রফিক আজাদ,নির্মলেন্দু গুণ,অসীম সাহা,মুহাম্মদ সামাদ প্রমুখ।এখন তিন ধারার উত্তর আধুনিকতা চলছে।এক পক্ষ মনে করেন আধুনিক চিরদিনই আধুনিক,দ্বিতীয় পক্ষ মনে করে সব কিছু ভেঙেচুরে উত্তর আধুনিক এবং তৃতীয় পক্ষ মনে করে উত্তর ঔপনিবেশিক আধুনিকই উত্তর আধুনিক।আমি তাদের থিয়োরি কপচানোকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বিজ্ঞান যুগে বিজ্ঞান কবিতা’র আন্দোলন করছি।সবকিছু বাদ এখন কবিতায় বিজ্ঞানবাদ।
মাইকেল,রবীন্দ্রনাথ,নজরুল,জীবনানন্দ,শামসুর রাহমান তারা সাহিত্যের মাইলফলক।তাদের কারো নাম মুছে ফেলার সুযোগ নেই।তারপর বিজ্ঞান কবিতা।এখানে বিজ্ঞান কবি হিসেবে কার নাম আসবে সেটা সময় বলবে।ইতিহাস নির্ধারণ করবে।
এখন অনেকে আমাকে বাংলাসাহিত্যের প্রধান বিজ্ঞানকবি বলে লিখছেন,বলছেন।কিন্তু এর মৌলিকত্বে পৌঁছাতে আমাদেরকে আরো অপেক্ষা করতে হবে।আধুনিকতার পরেই বিজ্ঞান।বিজ্ঞানের বাইরে এখন যারা লিখছেন,বা যারা বলছেন কবিতা মাত্রেই বিজ্ঞান কিংবা কবিতা আবেগের বিষয় তারা সঠিক বলছেন না।আর যারা বলছেন-কবিতায় বিজ্ঞান প্রাসঙ্গিক নয়,বরং কবিতায় বিজ্ঞান অপ্রাসঙ্গিক তারাও সঠিক বলছেন না।তারা সবাই ঝরে যাবেন।তাদের নাম বাতিল মালের তালিকায় বস্তাবন্দি হয়ে পড়বে।কবিতা মাত্রেই বিজ্ঞান নয়,তা জানা যাবে কলকাতার অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত আমার লেখা ‘কবিতায় বিজ্ঞান অ-বিজ্ঞান’ গ্রন্থ পাঠ করলেই।
আগামী দিনে বাংলাসাহিত্যের নেতৃত্বে বিজ্ঞানমনস্ক কবিরাই থাকবেন।কবিতার অনুসরণ করবে জীবন।
Leave a Reply