ইউসুফ ভাইকে স্মরণ -হাসনাইন সাজ্জাদী
।।
সলিমুল্লাহ রোড থেকে সাতক্ষীরা
আমাদের কান্না থামছে না ইউসুফ ভাইর জন্য।
ডিএম ইউসুফ হোসেন ভাই হার্ট এটাকে জীবন স্পন্দন হারিয়েছেন গত পরশু।সকালে তার মৃত্যু সংবাদ পাবার পর সারাদিন আর কোনো কাজ করিনি।লাশের অপেক্ষা আর থেমে থেমে ক্রন্দন করেছি। দু’দিন তার জন্য কান্নায় পার হয়েছে। জাতীয় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা শাখা(এন এস আই) র ফেনী জেলার প্রধান ছিলেন তিনি।মাত্র ৫০ বছর বয়সে ২ শিশুকন্যা ও স্ত্রী রেখে এভাবে তিনি চলে যাবেন এটা কারো যেমন জানা ছিল না তেমনি আমরা এখনো তার প্রস্থান মেনে নেইনি।আমিতো তার মৃত্যুর জন্য প্রকৃতিকে ধিক জানাচ্ছি।একেবারে ২০ মিনিটের মধ্যে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে বলে তিনি চলে গেলান।।কর্মক্ষেত্রে যাবার জন্য প্রস্তুতি নেবার মূহুর্তে তার হার্ট এটাক হয়।ভাবি ঢাকাতেই ছিলেন এবং আমাদের উপর তলাতেই অবস্থান করছিলেন।এ তলায় তাদের এক খালাতো ভাই বছর খানেক থেকে অবস্থান করছেন।এ তলাতেই ইউসুফ ভাই তার চাকরির শুরুতেই উঠেন।সাত বছর পূর্বে বড়ো বাসার প্রয়োজনে তিনি আমাদের পাশের বাড়িতে ফ্লাট ভাড়া নেন।কমপক্ষে ১৫ বছর এক সঙ্গে ছিলাম।আমাদের প্রয়োজনেই নয়,পরিচিত যেকারোই প্রয়োজনে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ এক দেবতুল্য মানুষ।
কালও বাসায় ফিরার পূর্বে মহল্লায় বাবুলের চায়ের দোকানে বসলাম।তাদের নিকট থেকে সারাদিন মানুষের আনাগোনা ও তার জন্য মানুষের কান্নার খবর জানলাম।একজন মহিলার কান্নার কথা ভাতিজা মামুন জানালো।গ্রামদেশেও মানুষ কাঁদছে তার খবর আসছে।এলাকার মানুষকে অর্থসাহায্য করতেন তা মামুন জানে।তার বিকাশের দোকান থেকেই তিনি অধিকাংশই মানুষকে সাহায্য করতেন।ভাবি ঢাকায় এসেছিলেন তার বাবা, মা, ছোটো ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর করোনার চিকিৎসা দিতে।স্কয়ারে তাদের চিকিৎসা চলছিল।তাই ভাবি নিজের বাসায় উঠেননি সতর্কতার জন্য।তার নিজেরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাই।এদিকে তার করোনা হয়ে পড়ে কি না এ নিয়ে টেনশনে ছিলেন ইউসুফ ভাই।রাত একটায় ও ভাবির সঙ্গে কথা হয়েছে। আর সকালেই চিরবিদায়। এ দুঃখ ভাবি যেমন ভুলতে পারছেন না তেমনি আমরা তার স্বজন ও আত্মীয়রাও ভুলতে পারছি না।
আগামী মাসেই কবিদের একটি দল নিয়ে ফেনী যাওয়া তার ব্যাবস্থাপনায় অনুষ্ঠানের কথা ছিল।বলছিলেন বাসায় ভাবি খাওয়াতে পারবে।বাবুর্চি আছে।থাকবেন সার্কিট হাউজে।গাড়িও আছে।আসেন দ্রুত।আমি চৌমুহনীর ঢাকাস্থ কবি বদরুল হায়দারের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম।ওখানে অনুজতুল্য কবি ও সাংবাদিক জাফর সেলিম ত ছিলেনই।তারিখ নির্ধারণ করে সবাইকে জানানোর আগেই তিনি আমাদের ছেড়ে গেলেন।সলিমুল্লাহ রোড কবরস্থানেই তাকে দাফন করা হয়েছে।গত রমজানের ঈদে তার খালাতো ভাই জাহিদ ফেনীতে স্বপরিবারে বেড়াতে গেলে তিনি তাকে সলিমুল্লাহ রোড কবরস্থানে দাফন করার মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন।
ইউসুফ ভাইর চিরকল্যাণ কামনা করছি।
Leave a Reply