আনন্দকাব্য না বিজ্ঞানচিন্তা?
হাসনাইন সাজ্জাদী
।।
কবিতাকে তিন অধ্যায়ে বিবেচনা করতে আমি অনুরোধ করি।
ক.বিনোদন ;
নিজের মত লিখলাম,নিজের মত ছন্দ দিলাম।দে দোল দে দোল ভাব নিলাম।প্রকৃত দোল আসলে আসলো না আসলে না।ভাব,ভাষা ও বাণীতে হেয়ালি।বিজ্ঞানতো নেইই।নেই উত্তর ঔপনিবেশিক বা উত্তর আধুনিক ভাবনা।এমনকি আধুনিকতার লেশমাত্র নেই।আছে নজরুল,রবীন্দ্র কিংবা আরো পেছনে মধুসূদনের অনুসরণ।কেউ বাহ বলুক না বলুক কিন্তু নিজে আনন্দ পেলাম।নিজের মত সুখ নিয়ে বেড়ালাম।সাহিত্যে তার কোনো স্থান হলো কী হলো না তা নিয়ে ভাবান্তর নেই।অন্যের লেখা পড়তেও অনাগ্রহী।নিজের লেখাই সেরা।নিজের ভাবনাই বয়ে বেড়াই নিজেরই কাঁধে।
এটা সাহিত্যের বর্জ্য।সাহিত্যে ঠিকবে না বললে এটা সাহিত্যেরও লজ্জা।
খ.চানাচুর কবিতা ও ফুচকা কবিতা;
কবিতার পাঠ সুন্দর।বাণীতে উন্নাসিকতা।দায়গোছ টাইপের কবিতা।কিন্তু কোনো কল্যাণমুখীতা নেই।এ কবিতা সমাজের উপকার অপকার কিছুই করতে সক্ষম নয়।যে কবিতার পাঠে কোনো কল্যাণমুখিতা নেই,-শুদ্ধতার কবি অসীম সাহা দাদার ভাষ্যে এটা চাচাচুর কবিতা।আর ড.চন্দন বাঙ্গালের কথায় তা ফুচকা কবিতা।সুযোগের ফলে এটাকে জনপ্রিয় কবিতা করে তুলছেন।
কবি কবিতা লিখে আবৃত্তি করিয়ে বেড়াচ্ছেন,নিজেও করছেন,ভুল ইতিহাস চর্চা করছেন।গীতিকবিতাকে আধুনিক কবিতা বলছেন।ঘন ঘন লাইভে আসছেন,অনুবাদ করাচ্ছেন।ছন্দ ছন্দ করে প্রাণপাত করছেন।কিন্তু এটাও সময়ের অপচয় করছেন মাত্র।পাঠকের কাছেও বিনোদনের একটি উত্তমমাত্রা এ কবিতা।
কিন্তু বাঁকবদলের ধারায় এ কবিতা বেকডেটেড এবং কল্যাণহীন মাত্র।তাই এ কবিতা হারিয়ে যাবে একদিন।
এবং
গ.বিজ্ঞান কবিতা;
কবিতার উপমা,উৎপ্রেক্ষা ও চিত্রকল্পে বিজ্ঞান থাকবে।বাণীতে থাকবে কল্যাণমুখীতা।অসার বাক্য হবে না।সত্য বলা ও আগাম দেখার কাজ করবে কবি।প্রাগ্রসরতা থাকবে কবিতার গঠন ও পঠনে।এমন কবিতাই বিজ্ঞান কবিতা।বিজ্ঞান কবিতা জনপ্রিয়তা পেতে সময় লাগবে।অথবা জনপ্রিয় নাও হতে পারে।কিন্তু বাঁকবদলের কাজটা করে দিবে বিজ্ঞান কবিতা।এ কবিতা মননে ও অন্বেষণে বিজ্ঞান।মানুষকে বিজ্ঞান ধর্মে সংগঠিত করবে।সব মানুষ একই ইলেকট্রন,নিউট্রন,প্রোটন ও প্রোটিন মানে একই নিউক্লিয়াস বা একই সাইটোপ্লাজম।জাতপাতের পার্থক্য আর ধর্মের লড়াই অযথা উন্মাদনা মাত্র-‘কবিতা মানুষকে এ বোধ দিবে’।এ বোধ বিজ্ঞানের।এ বোধটাই বিজ্ঞানধর্ম।তাই বিজ্ঞান শুধু পরীক্ষাগারে নিরূপিত সত্যই নয়।বিজ্ঞান ধর্মও বটে।
এ কবিতা হারিয়ে যাবে না কোনো দিন।কল্যাণে ও বিজ্ঞানে তা উচ্চারিত হবে বারবার।
বিজ্ঞান কবিতা নিয়ে এগিয়ে যাবে সাহিত্য…
Leave a Reply