আজ খ্যাতিমান গবেষক মোস্তফা সেলিমের ৫৪ তম জন্মদিন
নাগরীলিপি ও ফোকলোর গবেষক মোস্তফা সেলিমের আজ (৮ জুন) ৫৪তম জন্মদিন। পাঁচশ বছর প্রাচীন লুপ্ত বর্ণমালা সিলেটি নাগরীলিপি ও সাহিত্য নবজাগরণের পথিকৃৎ এই লেখক-গবেষকের প্রচেষ্ঠায় দেশের মূলধারায় যুক্ত হয়েছে সিলেটি নাগরীলিপি। বৃহৎবঙ্গের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সিলেট, আসাম, ত্রিপুরাসহ অন্যান্য জনপদে এই লিপিতে ছিল সাহিত্যচর্চা। কয়েকশ পাণ্ডুলিপি রচিত হয়েছে এই লিপিতে।
বাংলাদেশের বর্ণবৈচিত্র্যের এ গৌররগাথাকে পুনরুজ্জীবনের লক্ষে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন ২০০৯ সালে ‘কেতাব হালতুন্নবী’ প্রকাশের মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থ সংখ্যা ৩৪। সিলেটি নাগরীলিপির প্রাইমার ‘সিলেটি নাগরীলিপির বর্ণ পরিচয়’, নাগরীলিপি সাহিত্যের ইতিহাস সিলেটি ‘নাগরীলিপির ইতিবৃত্ত’, নাগরীলিপির চরিতাবিধান ‘সিলেটি নাগরীলিপি সাহিত্যের চরিতাবিধান’ রয়েছে এই গ্রন্থগুলোর অর্ন্তভুক্ত।
মোস্তফা সেলিমের সংগ্রহ ও সম্পাদনায় বাংলা মরমি গানের সর্বপ্রাচীন পাণ্ডুলিপি গোলাম হুসনের গান (১৭৭৪) প্রকাশিত হয়েছে এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। বাংলা ভাষার দুটো লিপির একটি সিলেটি নাগরীলিপির আদি গ্রন্থ উপস্থাপন করেছেন তিনি এবং বাংলালিপির আদি পাণ্ডুলিপি চর্যাপদ উপস্থাপন (১৯১৬) করেছেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। দুটো পাণ্ডুলিপির ভাব ও বিষয় একই। চর্যাপদে বৌদ্ধ সহজিয়াদের গান এবং নাগরীলিপিতে মুসলমান রচনা করেছেন মরমি গান।
মোস্তফা সেলিম মুক্তিযুদ্ধ গবেষণায় রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। ‘মুক্তিযুদ্ধে বড়লেখা’ (১৯৯৯) ছিল তাঁর প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ। লিবারেশন ওয়ারপিডিয়ায় তিনি অন্যতম লেখক। রনাঙ্গন থেকে প্রকাশিত দুটো পত্রিকা ‘জন্মভূমি’ ও ‘মুক্ত বাংলা’ তাঁর সংগ্রহ ও উপস্থাপনায় প্রতিলিপি সংস্করণ প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এই দুটো পত্রিকা সম্পূর্ণ দুষ্প্রাপ্য, পত্রিকাগুলো মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত হবে।
মোস্তফা সেলিম ১৯৭০ সালের ৮ জুন বড়লেখা উপজেলার ইটাউরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
Leave a Reply