বাংলাসাহিত্যের প্রধান আধুনিক কবি শামসুর রাহমান
-হাসনাইন সাজ্জাদী
আধুনিক কবিতার প্রথম পর্ব ফ্রান্সের কবি ত্রিস্তান জারার ‘পাওয়া কবিতা’।যা দাদা ইজম নামে খ্যাত হয়।পাওয়া কবিতার বিশেষত্ব হলো তা পাওয়া যেতে পারে সংবাদপত্রের খবর ও প্রতিবেদন থেকে,প্রবন্ধ নিবন্ধ থেকে কিংবা বিশেষ কোনো গ্রন্থ থেকে।যে কাজটি করতে হবে একটি নির্ধারিত অংশকে চারদিক থেকে কেটে নিয়ে ভেতরের অবশিষ্ট বাক্যের শব্দ এদিক ওদিক করে সাজানো তাহলে অপূর্ণ বাক্যের সাজানোর পূর্ণতা তৈরি করবে ‘পাওয়া কবিতা’।এ সাহসী উদ্যোগ থেকে পাপ, অঅন্ধকার ও তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে আধুনিক কবিতার পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন ফ্রান্সের শার্ল বোদলেয়র।ঢাকায় এর অনুকরণে আধুনিকতাবাদী কবিতা আন্দোলন শুরু করেন বুদ্ধদেব বসু।তারপর তা কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়।
এবার যুক্ত হন জীবনানন্দ দাশ,অমিয় চক্রবর্তী,বিষনু দে(বানান হয়নি) ও সুধীন চক্রবর্তী।দেশীয় প্রেক্ষাপট,উপমা এবং স্বাদেশিকতা মিলে আধুনিকতাবাদী আন্দোলন থেকে আধুনিকতায় আমাদের গীতিকবিতা থেকে উত্তরণ ঘটে।তারও পূর্বে মাইকেল মধুসূদন এখানে আধুনিক কবিতার গোড়াপত্তন করেন।
পরবর্তীকালে বিহারি লাল ও রবীন্দ্রনাথ গীতিকবিতাকে সামনে নিয়ে আসেন এবং গীতিকবিতায় রবীন্দ্রনাথ নোবেল পান।বাংলাদেশের কবিতায় আধুনিকতা শুরু হয় কবি আবুল হোসেনের হাত দিয়ে এবং তার আদল সম্পন্ন করেন কবি শামসুর রাহমান।
কবিতাকে তিনি পদ্য থেকে বের করে আনেন এবং নাগরিক উপমায় কবিতাকে আধুনিক করেন।আধুনিক কবিতার প্রধান শর্ত হলো নাগরিক উপমা থাকতে হবে।যেমন আমার বিজ্ঞান কবিতার প্রধান শর্ত হচ্ছে কবিতার উপমা,উৎপ্রেক্ষা ও চিত্রকল্পে বিজ্ঞান থাকা।
আর সরাসরি যে কবিতা বিজ্ঞান নিয়ে লেখা হবে তা হবে কবিতাবিজ্ঞান।এ বিষয়ে আমি ‘কবিতাবিজ্ঞান’ নামে আলাদা গ্রন্থ লিখেছি যার প্রকাশনার দায়িত্ব নিয়েছে ‘কবিতাচর্চা’।কবি বদরুল হায়দার কবিতা চর্চার সত্ত্বাধিকারী।আশির দশকের শেষ দিকে আমি বিজ্ঞান কবিতা আন্দোলন শুরু করি জাতীয় কবি সংগঠন অনুপ্রাসের ব্যানারে।
তখন সব কিছু ভেঙে দিয়ে কথিত রি-কনস্ট্রাকশন নামে যে উত্তর আধুনিকতার চর্চা সাহিত্যে ছিল তার সবই ছিল আধুনিক কবিতার পুনর্লিখন মাত্র।আমিই বিজ্ঞান যুগের বিজ্ঞান কবিতার স্লোগানকে এখন বিশ্বসাহিত্যে পৌঁছে দিয়েছি।
জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্ট্যাডিজে ২০১৫ খৃষ্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর আয়োজিত চতুর্থ বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনে আমি ‘সায়েন্স পোয়েট্রি ইন সায়েন্স এজ’ উপস্থাপন করে বিজ্ঞান কবিতা আন্দোলনকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছি।কবিতার বিশ্বজনীন সংজ্ঞা অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধান আধুনিক কবি শামসুর রাহমান।অন্য কেউ নয়।
Leave a Reply