আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ওয়ারিতে, হেয়ার স্ট্রিটে। বিখ্যাত অভিনেতা আলতাফ ছিলেন আমাদের মহল্লার। আমাদের বাড়ি থেকে তাঁর বাড়ি হাঁটা পথে দেড় মিনিট। মিনিট দশেক দূরত্বে, ওয়্যার স্ট্রিটে থাকতেন সুভাষ দত্ত। আর পাশের মহল্লায়, নারীশিক্ষা মন্দির পেরিয়ে সরু গলি ‘চন্ডিচরণ বসু স্ট্রিটে’ থাকতেন আজিম-সুজাতা।
ছেলেবেলায় কী যে মুগ্ধতা নিয়ে ওঁদের দেখতাম! পাশের মহল্লা ঠাটারি বাজার বিসিসি রোডে থাকতেন সোহেল রানা ওরফে মাসুদ পারভেজ। বিসিসি রোডে থাকতেন ফরিদ আলীও। যোগীনগরে বাস করতেন বাকের নামের একজন কৌতুক অভিনেতা। বেশ পরে, লারমিনি স্ট্রিটের সুদর্শন তরুণ মাহমুদ কলি সহনায়ক হিশেবে আবির্ভূত হলেন, ‘মাস্তান’ নামের একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। তারপর ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠলেন জনপ্রিয় নায়ক।
টিপু সুলতান রোডে থাকতেন অভিনেতা আবদুল মতিন, নবাব সিরাজউদদৌলাকে ছুরিকাঘাতে হত্যাকারী সেই ভয়াবহ শিল্পী। আমার চারপাশটা ছিলো ফিল্মি দুনিয়ার বিখ্যাত মানুষদের উপস্থিতির ঔজ্জ্বল্যে ঝকঝকে চকচকে।
আমার শৈশবের মহল্লা সংস্কৃতির একটা সুন্দর ব্যাপার ছিলো। এলাকার সবাই সবাইকে চিনতাম জানতাম। ‘মহল্লাকা বড়া ভাই’ আলতাফ। দেখলেই সালাম দেই। তিনিও চমৎকার মিষ্টি হাসিতে কুশল বিনিময় করেন। তবে এই সালাম পর্বটা হতো দিনের বেলায়।
দিনের আলতাফ আর রাতের আলতাফ দু’জন ভিন্ন মানুষ ছিলেন। সকালে ইন করা শার্ট চকচকে জুতো পরা স্মার্ট আলতাফ ভাই কাজে বেরুতেন। পায়ে হেঁটে গলিটা মানে মুচিপাড়াটা অতিক্রম করে রিকশা নিতেন। রিকশা নেবার সময় তাঁর বিখ্যাত মিষ্টি হাসিতে কুশল বিনিময় করতেন।
সকালের হাস্যোজ্জ্বল আলতাফ ভাইয়ের সঙ্গে কাজ থেকে মানে শ্যুটিং থেকে ফেরা রাতের আলতাফ ভাইয়ের কোনো মিল খুঁজে পেতাম না। ভাড়া নিয়ে প্রায়শ রিকশাঅলার সঙ্গে গোলমাল বেঁধে যেতো তাঁর। তখন, হইচই চিৎকার করে পাড়া মাথায় তুলতেন আলতাফ ভাই। তাঁর চিৎকার শুনে তাঁর বাসা থেকে ছুটে আসতেন হামিদ ভাই, আলতাফ ভাইয়ের কাজের লোক। আসলে কাজের লোক বললে ঠিক বলা হবে না।
তিনি ছিলেন আলতাফ ভাইয়ের কেয়ার টেকার বা বিশেষ সহকারী। আলতাফ ভাইকে সেবা করাটাই ছিলো হামিদ নামের লোকটার প্রধান কাজ। মহল্লার সংস্কৃতির কারণে কাজের লোক হয়েও সিনিয়রিটি ভিত্তিতে তিনি ছিলেন আমাদের ‘হামিদ ভাই’। আমরা তাঁকে হামিদ ভাই ডাকতাম, আপনি করে বলতাম।
কিন্তু আমাদের তিনি নাম ধরে ডাকতেন, তুমি সম্বোধন করতেন। হামিদ ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে টলমলানো এলোমেলো পদক্ষেপে অদৃশ্য শত্রুর প্রতি উচ্চকণ্ঠে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করতে করতে বাড়ি ফিরতেন আলতাফ ভাই। এক রাতে শ্যুটিং ফেরত আলতাফ ভাই, রিকশাঅলার ওপর ক্ষিপ্ত আলতাফ ভাই তাঁর অসাধারণ বিশুদ্ধ উচ্চারণে হুমকি দিচ্ছিলেন হামিদ ভাইয়ের কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে।
হুমকিটা দারূণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিলো আমার কাছে কারণ সেই হুমকির মাধ্যমেই আমি প্রথম জানতে পেরেছিলাম ‘ওরা এগারোজন’ ছবিতে তাঁর সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারটি। জড়ানো উচ্চারণে তিনি বলছিলেন—‘তুই কি জানিস হারামজাদা আমি কে? আমি ওরা এগারোজনের একজন। একদম গুলি করে দোবো। এলএমজির ব্রাশ ফায়ারে খুলি উড়িয়ে দোবো।’
(পরে ‘ওরা এগারোজন’ মুক্তি পেলে আমি দেখেছিলাম তাঁর অসাধারণ অভিনয়। বাংকারের আড়ালে থেকে মাটিতে উপুড় হয়ে অস্ত্র চালাচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ। গুলি ফুরিয়ে গেলে পকেট থেকে গুলি বের করতে গিয়ে পকেটে থাকা তাঁর ছোট্ট মেয়ের খেলনা পুতুলটা হাতে চলে আসে। যুদ্ধ-টুদ্ধ ভুলে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তিনি খেলনাটাকে দেখতে থাকেন। পুতুলটার মাধ্যমে তাঁর ছোট্ট মেয়েটাকেই যেনো বা ছুঁয়ে আদর করছেন তিনি। শত্রুসেনার অবিরাম গুলির মুখে জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে আলতাফের। আহা কী অপূর্ব সেই দৃশ্যটা!)
প্রায় রাতেই আমাদের বাড়ির সামনে রিকশা থেকে নেমে রাস্তার টং দোকান থেকে এক খিলি পান কিনতেন আলতাফ ভাই। পান থেকে চূন খসলেই নোয়াখাইল্লা দাঁড়িওয়ালা দোকানিকে কষে এমন ধমক দিতেন যে ব্যাটার কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যেতো। পানের পাতায় খয়ের আর চূন লাগাতে গিয়ে বিতিকিচ্ছিরি কান্ড করে ফেলতো লোকটা।
এক রাতে কী যে হলো আলতাফ ভাইয়ের! কোনো কারণে আগেই রেগে ছিলেন। পানদোকানির বানানো খিলি পান একটা একটা করে ন্যান, মুখে পোড়েন, দুতিনটা চিবুনি দিয়ে ওয়াক থু করে ফেলে দেন রাস্তায়। তারপর ধমক—‘এইশ্শালা এটা কী বানিয়েছিস?’ এভাবে পান মুখে নেয়া আর ফেলে দেয়া পর্ব চলতে থাকলো।
টং দোকানের সামনের অংশটা খিলি পানের ডাস্টবিনে পরিণত হলো কিছুক্ষণের মধ্যেই। হামিদ ভাই ছুটে এসে আলতাফ ভাইকে বাড়ি নিয়ে গেলেন। পরদিন সকালে শ্যুটিং-এ যাবার আগে নিপাট ভদ্রলোক হাস্যোজ্জ্বল আলতাফ ভাই নোয়াখাইল্লার নষ্ট করা পানগুলোর দাম মিটিয়ে দিয়ে গেলেন। সেই নোয়াখাইল্লা আমাকে বলেছিলো—‘আলতাপ বাই মানুষ খারাপ ন। খালি হাগলা হানি খাই হাগোল অই যারগোই।’
চমৎকার ফুটফুটে দুটো ছেলেমেয়ে ছিলো আলতাফ ভাইয়ের। ছেলেটা দেখতে একেবারে মিনি আলতাফ। আর মেয়েটা ছিলো পরীর মতো সুন্দর। মেয়েটা ওর মায়ের আদল পেয়েছিলো। মিসেস আলতাফ ছিলেন একজন অভিজাত রূপসী মহিলা। আলতাফ ভাই প্রায় রাতেই এলোমেলো অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে চ্যাঁচামেচি করতেন।
আমাদের বেলকনি থেকে খানিকটা অস্পষ্ট হলেও দেখা যেতো আলতাফ ভাইদের দোতলার ঘরটা। দূর থেকে আলতাফ ভাইয়ের চ্যাঁচামেচি স্পষ্ট শুনতে না পেলেও তাঁর ক্ষিপ্র গতির মুভমেন্ট দেখে বোঝা যেতো তিনি এলোমেলো করছেন, অন্যায় করছেন।
আমাদের বাড়িতে প্রতিবেশী অতিউৎসাহী মহিলাদের আগমন ঘটতো। গতকাল বা গতপরশু আলতাফ ভাই কর্তৃক তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে রাগারাগির বিস্তারিত বর্ণণার ঝাঁপি খুলে বসতেন সেই মহিলারা। তবে মহিলাদের একটা বিস্ময় ছিলো মিসেস আলতাফ সম্পর্কে। মহিলাদের কোনো একজন দরদী সেজে পরেরদিন নাকি গিয়েছিলেন সেই বাড়িতে।
তারপর মিসেস আলতাফের প্রতি বানোয়াট সহানুভূতি প্রদর্শন করে বলেছেন—‘ভাবী, এই যে রোজ রোজ আলতাফ সাহেব আপনাকে এভাবে গালাগাল করে, মারধর করে, আপনি প্রতিবাদ করেন না কেনো?’ জবাবে মিসেস আলতাফ নাকি বলেছেন—‘ওইসব ছাইপাশ খেয়ে আসে বলে একটু চিৎকার হইচই করে ঠিকই কিন্তু ও তো কোনোদিন আমার গায়ে হাত তোলেনি! ভবিষ্যতে এইসব ফালতু ব্যাপার নিয়ে আলাপ জমাতে আসবেন না ভাবী।’
মিসেস আলতাফের সেই আত্মমর্যাদাবোধ ও সহনশীলতার বিষয়টা সেই বয়েসে পুরোপুরি না বুঝলেও প্রতিবেশী কুটনি মহিলাদের অতি উৎসাহের ব্যাপারটা আমার ভালো লাগতো না। অন্যের সংসারের খুঁটিনাটি বিষয়ে বাঙালি মাঝবয়েসী মহিলাদের নাক গলানোর অভ্যেসটা শৈশব থেকেই আমার খুব অপছন্দের ছিলো।
সেই খালাম্মাদের কিছু না বললেও আমি আমার মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আলতাফ ভাইয়ের সংসারের ব্যক্তিগত ব্যাপারে খালাম্মাদের এতো আগ্রহ কেনো? আপনি কেনো ওদের সঙ্গে সেই আলোচনায় মুগ্ধ শ্রোতার মতো শামিল হয়েছেন? ভবিষ্যতে খালাম্মারা এই বিষয় নিয়ে দরবার বসালে আমি কিন্তু আলতাফ ভাইকে বলে দেবো।
আমার হুমকিতে কাজ হয়েছিলো। আমার মা সেই খালাম্মাদের বলে দিয়েছিলেন আমার অপছন্দের কথাটা। আমি মুখের ওপর সত্যি কথাটা বলে দিতে পারি চোখের দিকে তাকিয়ে, এটা খালাম্মাদের অবহিত করেছিলেন আমার মা। সুতরাং দ্বিতীয়বার অন্তত আমার উপস্থিতিতে এইরকম গসিপিং থেকে তাঁরা বিরত থাকতেন।
আলতাফ হোসেনকে অধিকাংশ মানুষই নিছক কৌতুক অভিনেতা মনে করেন। হ্যাঁ, বেশ কিছু চলচ্চিত্রে কৌতুক অভিনেতা হিশেবে তাঁকে আমরা দেখেছি বটে কিন্তু তিনি কেবল একজন কৌতুক অভিনেতাই ছিলেন না!
‘এতটুকু আশা’ চলচ্চিত্রে আবদুল জব্বারের গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়/দুখের দহনে করুণ রোদনে তিলে তিলে তার ক্ষয়/আমি তো দেখেছি কতো যে স্বপ্ন মুকুলেই ঝরে যায়/শুকনো পাতার মর্মরে বাজে কতো সুর বেদনায়/আকাশে বাতাসে নিষ্ফল আশা হাহাকার হয়ে রয়…গানটিতে লিপসিং করেছিলেন আলতাফ। কী অসামান্য অভিনয়ই না করেছিলেন তিনি গানটায়! এছাড়া ‘তেরো নং ফেকু ওস্তাগার লেন, আলোর মিছিল, ওরা এগারোজন, এপার ওপার—এরকম অনেক ছবিতেই আমরা শক্তিমান অভিনেতা আলতাফকে দেখেছি।
একদিন খুব সকালে, ১৯৭৮ সালের ২৬ মে, জানতে পারলাম আমার প্রিয় অভিনেতা আলতাফ ভাই মারা গেছেন। হামিদ ভাই ছোট বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কাঁদছিলেন—‘আমার স্যার নাই আমার স্যার নাই’ বলে। এই হামিদ ভাইয়ের সামনের পাটির একটা দাঁত ছিলো ভাঙা। নিজের দাঁত ভাঙার কাহিনিটা হামিদ ভাইই বলেছিলেন আমাকে।
একদিন সকাল বেলায় আলতাফ ভাইয়ের কাজকর্ম করে দিতে তাঁর সামনে গেলে আলতাফ ভাই খেয়াল করলেন হামিদের ঠোঁট অসম্ভব ফোলা এবং সেই সঙ্গে মুখটাও। –‘ঘটনা কি? কী হয়েছে রে হামিদ?’ আলতাফ ভাই লক্ষ্য করলেন হামিদের ঠোঁট শুধু ফোলাই না। রীতিমতো ক্ষতবিক্ষত। সামনের পাটির একটা দাঁতও ভাঙা। –‘বল্ হামিদ কী হয়েছে তোর? কে তোকে মেরেছে? কার এতো বড় আস্পর্ধা?’
খুব ক্ষীণ কণ্ঠে দ্বিধাজড়োসড়ো হামিদ ভাই বলেছিলেন—স্যার, কাইল রাইতে আপনে রাস্তায় উলটাপালটা করতেছিলেন বইলা আমি আপনেরে জোর কইরা ধইরা বাড়িতে আনতেছিলাম। আপনের হুঁশ আছিলো না। চেইতা গিয়া আপনে আমারে ঘুষি মারছিলেন।
নিজের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত আলতাফ ভাই নাকি হামিদ ভাইকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছিলেন—‘তুই আমাকে মাপ করে দে ভাই মাপ করে দে…।’ তারপর হামিদ ভাইকে তিনি নিজেই নিয়ে গিয়েছিলেন ডাক্তারের কাছে। চিকিৎসা করিয়েছেন যথাযথ। এবং জরিমানা হিশেবে হামিদ ভাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বেশ কিছু টাকা। সেই হামিদ ভাই আলতাফের মৃত্যুর পর শিশুর মতো কাঁদছিলেন—আমার স্যার নাই আমার স্যার নাই…।
সাতসকালেই আমাদের মহল্লাটা কী রকম ঝিম ধরা লাটিমের মতো স্থির হয়ে গেলো। সকালের নরোম রোদ অনুজ্জ্বল। সকালের স্নিগ্ধ বাতাসে নেই কোনো ঝিরিঝিরি কম্পন। কী রকম শোকার্ত হয়ে উঠলো চারপাশ। যোগিনগরের দিকের মুচিপাড়ার সরু গলিটা লোকে লোকারণ্য। আমাদের বাড়ি লাগোয়া প্রশস্ত রাস্তায় জমাট বাঁধা ভিড়।
রেলিং ধরে আমি দাঁড়িয়ে আছি আমাদের দোতলা বাড়ির ব্যালকনিতে। একটু পর পর একেকটা গাড়ি আসছে। গাড়ির ভেতর থেকে বেরুচ্ছেন চলচ্চিত্র অঙ্গণের বিশিষ্ট মানুষেরা। বিখ্যাত অভিনেতা অভিনেত্রীরা। রিকশা করেও আসছিলেন কেউ কেউ। ভিড় ঠেলে তাঁরা যাচ্ছেন আলতাফ ভাইয়ের বাড়ির দিকে। একেকটা গাড়ি আসে। একেকজন বিখ্যাত শিল্পী সেই গাড়ি থেকে নেমে আসেন।
আর কিছুক্ষণ আগের শুনশান নিরবতা এবং নিরব কান্নার জমাট বাঁধা শোকগুচ্ছ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। সিনেমা হলের বড় পর্দার তারকাদের নাগালের মধ্যে পেয়ে সমবেত জনগণ শোক ভুলে কী রকম উৎফুল্ল হয়ে ওঠে—অই যে অই যে এটিএম এটিএম! এটিএম শামসুজ্জামান! অই যে খান জয়নুল!
অই যে রবিউল! রানু রে রানু! আনোয়ার হোসেন আইছে! অইটা বেবী জামান! নায়ক ওয়াসীমের গাড়িটা এলে কেউ কেউ উত্তেজনায় হাততালি দেয়া শুরু করলো! সে এক অবিশ্বাস্য পরিস্থিতি। একজন অসামান্য শিল্পী আলতাফ হোসেনের মৃত্যু এই মানুষগুলোর জন্যে যেনো বা আনন্দের পয়গাম নিয়ে এসেছে! আমার দুচোখ জলে ভ’রে যায়—‘তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়?/দুখের দহনে করুণ রোদনে তিলে তিলে তার ক্ষয়…।
জীবনের অতিশয় ক্ষুদ্র মোহের কাছে একদঙ্গল মানুষকে আমি সেদিন পরাজিত হতে দেখেছিলাম।
আজ সকাল থেকেই কী কারণে জানি না বারবার শুধু আলতাফ ভাইকে মনে পড়ছিলো। আমার শৈশব কৈশোরকে মাতিয়ে রাখা আলতাফ ভাইয়ের জন্ম বা মৃত্যুর তারিখটা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পেলাম না কোথাও। ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে কতো খুচরো আলতাফকে পেলাম কিন্তু আমার প্রিয় অভিনেতা ‘মহল্লাকা বড়া ভাই’ আলতাফ হোসেনকে পাওয়া গেলো না একদমই।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট লোকজনও আলতাফকে ভুলে গেছেন। ওরাও আলতাফকে স্মরণ করেন না। আজ সারাদিন কাজের সময়টায় আমার ল্যাপটপের স্ক্রিনে সচল ছিলেন আলতাফ ভাই। স্ক্রিনে ‘তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়’ গানটা রিপিট হচ্ছিলো বারবার, ইউটিউবের কল্যাণে।
বাড়ি ফিরেও আপনাকে খুব মনে পড়ছে আলতাফ ভাই…।
রচনাকাল/
অটোয়া ০২ অক্টোবর ২০১৪
Leave a Reply