কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতার পরের কবিতা
-হাসনাইন সাজ্জাদী
।।
নিরঞ্জনের পৃথিবী ঝুলছিলো বাড়ির পেছনের বৃক্ষডালে
ফলের দোকানে ঝুলিয়ে রাখা আপেল হয়ে
শ্রদ্ধেয় কবি নির্মলেন্দু গুন তাকে কবিতায় লিখে দেন,
করেন প্রচার
নিরঞ্জন তার বন্ধু বলে।
আমার পৃথিবী ঝুলে না কারো মনের গহীনে,পরান মাঝি হয়ে
আমার কী কোন বন্ধু নেই তবে?
আমারও বুক জ্বালা করে, বুঝতে পারি কোথাও আমার পরিবর্তন ঘটছে
ক্ষয় ঘটে আমাকে করেছে দূর্বল চিত্ত
যেমন কিশোরবেলায় আমি অবাক বিস্ময়ে সহপাঠীনিদের পরিবর্তন লক্ষ করতাম
শারীরিক ও মানসিকভাবে তারা আমাদের পেছনে ফেলে দিয়েছিল।
তারপর ভাতের মাড় পড়ে গিয়ে পুড়ে যাওয়া এক গরীব কিশোরীর বুক
আমাকে দেখানো হয়েছিল,ডাক্তার খানা থেকে ঔষধ কিনে আনার প্রয়োজনে
প্রথমবার আমি তার বুকে মনোযোগ দিয়েছিলাম ক্ষত বোঝার জন্য
পুনর্বার আমি তা দেখেছিলাম অধিক বিস্ময়ের ঘোর থেকে
অথচ তার ঔষধ ছিল বার্নল যা আমি তার বুকের ক্ষত না দেখেও কিনে দিতে পারতাম।
আজ যেমন আমি ক্ষত না দেখেই নারীর কষ্ট বুঝতে পারি
তবে আমার নারীবিজ্ঞানের সে ঘোর সে বিস্ময়
আজো বর্ষায় বহতা জুড়ী নদীর মত আনচান
কখনো তা শুকিয়ে যায়,আবার কখনো জল উপচে পড়ে কণ্ঠিনালার মত
জুড়ী নদীর শাখা নদী কণ্ঠিনালা আগেই প্রবাহিত বলে তা জল বেশি টেনে নেয়
আগে ছিল পাবিজুড়ী সেও এখন বেদখল মৃত
আর আনজুড়ী নদীর অস্তিত্ব বিলীন,সেখানে এখন খাস জমি ডিসির খতিয়ান
কোনো কোনো স্থান বেদখল আর মুক্তিযোদ্ধার নামে হয়েছে কিয়দংশ বরাদ্ধ।
জুড়ীর লুপ্ত,সুপ্ত ও খরস্রোতা এ তিন শাখা নদীর মতো
আমার মন বার বার পরিবর্তনশীল
কখনো প্রেম উপচে পড়া আবার কখনো একেবারেই নিরুদ্বিগ্ন বালক
কখনো মনের গহীনে চিনচিনে ব্যাথা
আসলে জুড়ী নদীর পলিতে গড়া,হাকালুকি পাড়ের মানুষ আমি
বহুধা বিভক্ত আমার অভিজ্ঞতা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও আমার বৈচিত্র্যময়
আমি তাই কবি বয়ে চলি নানা ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে যাই কতকিছু।
আমার বুকে চিনচিনে ব্যথা কেন থাকবে না বলো?
Leave a Reply