আমি কে?আমার প্রথম পরিচয় আমি মানুষ। দ্বিতীয় পরিচয় হিসেবে আমাকে বলা হয় নারী, পুরুষের অর্ধাঙ্গিনী। কিন্তু না আমি কারো অর্ধেক নয়, আমি পুরোপুরি একজন মানুষ। একজন পুরুষের সমান বা, তার থেকে ও বেশী শক্তি, মেধার অধিকারী আমি হতে পারি। আমিই সম্ভবত পৃথিবীতে সবচেয়ে আলোচিত প্রানী। কারণ পৃথিবীর প্রতিটা ধর্মগ্রন্থ, নারীকে বন্ধি করার খাঁচা ।
ধর্ম প্রবর্তকেরা ঈশ্বরের থেকে বেশী নারী নিয়ে লিখেছেন, কী করে নারীকে বন্দী করা যায়। তারা বেশ সফল নিজেদের প্রচেষ্টায়। তার চেয়ে বেশি সফল নারীদের কারণে। অর্ধেক নারী তার চেতনা হারিয়ে, পুরুষ নামক কাপুরুষের কাছে বন্দী হয়ে থাকে। অনেকে সেচ্ছায় বন্দিনী হয়েছে।
দ্য ব্যাভোয়ার বলেছেন নারী মনুষ্যপ্ৰজাতির শিকার; পুরুষ তার শরীরকে অতিক্রম ক’রে গেছে, কিন্তু নারী পশুর মতো, শুধু জন্ম দেয়াই যার একান্ত ধর্ম, বন্দী হয়ে রয়েছে নিজের শরীরের শেকলে।
আসলেই কিছু নারী এখনো নিজেকে জরায়ু হিসেবে দেখে, কোনো অপরাধ না করেও সেচ্ছায় অপরাধীর মতো চলে। সমাজের এই ঘুমিয়ে থাকা নারীগুলোর জন্যই, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আরো বেশী শোষন করার স্পর্দা দেখাচ্ছে৷। ঘরে বাইরে যুদ্ধ করে জয়ী হওয়া নারীকেই, একদল নারী কলঙ্কীনি বলে গাল দিচ্ছে ।
আমি পুরুষতন্ত্র থেকে মুক্তি চাই না, পুরুষতন্ত্র কে আমি দুই টা লাথি দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারি।
আমি ওসব নারীগুলোর মুক্তি চাই, ওসব নারীদের কাছ থেকে প্রগতিশীলদের বাঁচাতে চাই যে নারী গুলো পুরুষতন্ত্রের খাঁচায় বন্দি। পুরুষের চেয়ে ও এই খাঁচায় বন্দি নারী গুলো ভয়ংকর। কারণ তারা না বুঝে সেচ্ছায় কারাবাস গ্রহন করেছে, এবং পরবর্তী প্রজন্মকে ও তারা এভাবে কারা বন্দি করছে। পুরুষের চেতনা কখনো ফিরবে না, পুরুষ কখনো নারীকে স্বাধীনতা দিতে চাইবে না, পুরুষকে ডিঙিয়ে সামনে এগোতে হবে,।
পুরুষের আগে নারীদের বোধ জাগ্রত করা বেশ প্রয়োজন। নারী রা নিজের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হলেই, নারী জয়ী হবে কোনো পুরুষ আটকাতে পারবে না।
আমি কাউকে বদলাতে আসিনি, আমি শুধু চেতনা ফেরাতে এসেছি। প্রতিটি নারীর চেতনা ফিরলেই তারা জয়ী। নারীজাতির অধীনতা দূর হবে প্রগতি ও নৈতিকতার ক্রমাগ্রগতির ফলে। কারন মানুষ কখনো পেছনে যেতে পারে না, সামনে এগোবে, আর সামনের দিনগুলো হবে প্রগতিশীলদের। যে নারী গুলো পুরুষতন্ত্রের খাঁচায় বন্দি। তারা শীঘ্রয় বুঝবে –
যে নিয়মটা তারা মানছে ওটা পুরুষতন্ত্রের বানানো খাঁচা,
খাঁচায় বসে যায় না বাঁচা,।
কথায় আছে – আমরা নারী আমরা পারি। নারী সব জায়গায় জয়ী হতে পারি বলে, নারীদের আটকাতে এতো নিয়ম তৈরি করা হলো,কেনো জানেন? কারণ নারীদের যৌনাঙ্গ এবং উঁচু বক্ষের প্রতি পুরুষের প্রচুর লোভ। সারাদিন তাদের ঘরে বসিয়ে ভোগের বস্তু হিসেবে উপভোগ করতেই এতো ধর্ম সৃষ্টি ।
কোনো লাভ নেই, সকল ফন্দি ভেঙ্গে দিয়ে নারীরা এগিয়ে যাবে, যেভাবে এগিয়েছে বেগম রোকেয়া প্রীতিলতা,আর তসলিমা নাসরিনের মতো
প্রগতিরা ।
বৃষ্টি রহমান
Leave a Reply