শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

আগামী দিনের পৃথিবী -শাহাদাত হোসেন

আগামী দিনের পৃথিবী -শাহাদাত হোসেন

আগামী দিনের ধর্ম বিহীন পৃথিবী
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
মানুষের মন দুই ধরনের,
১-পরনির্ভরশীল বদ্ধমন
২-স্বাধীন মুক্তমন।

আমাদের এই মহাবিশ্ব সীমাহীন, বাধাহীন, অফুরন্ত সম্প্রসারণশীল, অনন্ত অসীম এক স্বাধীন জগত । যে জগতের নাই কোন স্রষ্টা, নাই কারো হুকুমের বিধি নিষেধ । তাইতো সেখানে নিরবচ্ছিন্ন চলার পথ বাধাগ্রস্ত হয় নাই, সীমাবদ্ধতা আরোপ হয় নাই , সার্বিক বিকাশের পথে কোন অন্তরায় সৃষ্টি হয় নাই ।

পরাধীনতা বা অধীনতা মানে অপরের ইচ্ছার দ্বারা সীমিত, বাধাপ্রাপ্ত, স্বল্প পরিসর, নির্দিষ্ট অবয়বে সীমাবদ্ধ এক জগত । যে জগতে রয়েছে একজন স্রষ্টা, যাহা পরিচালিত হয় তার হুকুমে। এই জগত বাস্তব নয় বরং কল্পিত জগত । প্রাকৃতিতে এইরূপ জগতের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

পরনির্ভরশীল মনের কথা:
স্বল্প জ্ঞানী ও দুর্বল মনের অধিকারীরা বলেন যদি স্রষ্টাই না থাকে তবে মানুষ কিসের ভরসায় চলবে ? কে শান্তনার বাণী শুনিয়ে মনের জ্বালা, গ্লানি ও বিদ্রোহকে দমন করবে ?
যার কেউ নাই , তার রয়েছে স্রষ্টা ।
টাকা মেরেছে , প্রতারণা করেছে , মারধর করেছে , জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছে , ঘুষ নিয়েছে,অহেতুক নির্যাতন করেছে…. উপরে একজন আল্লাহ আছে , তিনি সব দেখছেন ও বিচার করবে । মরলে আল্লাহ পাছা দিয়া গরম শিক ঢুকাইয়া দিবে। এই আশ্বাসটুকুই মানুষের মধ্যকার হতাশা ,ক্ষোভ ,ঘৃণা ও বিদ্রোহকে প্রশমিত করে দেয়। ।

মুক্ত ও স্বাধীন মনের কথা
যদি পৃথিবীতে কোন ধর্ম না থাকে তবে মৃত্যুর পর পাপ-পুণ্যের বিচারও থাকবে না । মানুষ যতদিন পৃথিবীতে জীবিত থাকবে ততদিনই সে পৃথিবীর সমস্ত সুখ ভোগ করবে । তখন পরকালের দোহাই থেরাপি আর কাজ করবে না । তাই ,
১-মানুষ সমস্ত লাঞ্ছনা-বঞ্চনা শোষণ নিপীড়ন, নির্যাতন, ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি সহ যত প্রকার অন্যায় অবিচার, অনিয়ম রয়েছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠবে ।
২-কেউ থাকবে বিলাসবহুল প্রাসাদে এবং কেউ থাকে ফুটপাতে – তা হবে না ,তা তারা মেনে নিবে না । ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বলবে,পৃথিবীতে কেউ সম্পদ বানাতে পারেনা , কেবলমাত্র ব্যবহার করতে পারে এবং পৃথিবীতে কেউ সম্পদ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। সুতরাং মানুষের ব্যক্তিগত বলে কোন সম্পত্তি থাকবে না। সকলে মিলে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্ত কিছু ভোগ করবে ।
৩–ভবিষ্যতের উন্নত মানুষগুলো আল্লাহ,ভগবান,গড, ঈশ্বর ইত্যাদি কল্পিত স্রষ্টার সান্নিধ্য ত্যাগ করার ফলে চিন্তা ভাবনার জগতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হবে তাহা এই মহান প্রকৃতির সান্নিধ্য দ্বারা পূরণ হবে । তাই স্রষ্টার হুকুমের কেরামতি থেরাপি থাকবে না । মুক্ত ও স্বাধীন মন নিয়ে আনন্দ চিত্তে সৃষ্টির কারণ অনুসন্ধানে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে । মানুষ তার সৃজনশীলতা ও মননশীলতার দ্বারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ সর্বক্ষেত্রে নব নব আবিষ্কারের মাধ্যমে অতি দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে চলবে । মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, দৈহিক শক্তি বেড়ে যাবে এবং সেই সাথে মানুষের আয়ুষ্কাল অনেক বৃদ্ধি পেয়ে কয়েক শত বছরে উন্নীত হবে ।
৪-ধর্মহীনতার ফলে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যকার সমস্ত দ্বন্দ্ব ও সংঘাত , যুদ্ধ ,নানাবিধ অর্থনৈতিক , বাণিজ্যিক,রাজনৈতিক শোষণ , বৈষম্য চিরতরে দূর হয়ে যাবে । মানুষ এক পৃথিবীর স্বপ্ন দেখবে এবং পৃথিবী একটি রাষ্ট্রে পরিণত হবে ।

ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সামনের নৌকা যেদিকে যায় , পিছনের নৌকা তাকে অনুসরণ করে সেদিকেই ধাবিত হয় । প্রকৃতিক জগতের নিয়ম এরকমই হয়ে থাকে । এই কারণেই অতীতের কিছু অগ্রসরমান নিদর্শন যেমন বর্তমানকালে দৃশ্যমান হচ্ছে তদ্রূপ বর্তমানের কিছু অগ্রসরমান নিদর্শনসমূহও ভবিষ্যত গন্তব্যের পথ-নির্দেশ করবে । তাই অতীতের কিছু নিদর্শন যেমন, বিভিন্ন রাজপ্রাসাদ , আগ্রার তাজমহল , ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান ইত্যাদি ইঙ্গিত দিয়েছিল তাদের ভবিষ্যত বংশধর এই ধরনের ইমারতে থাকবে । যদিও বর্তমানে আমরা তার চেয়ে অনেক আধুনিক ইমারতে বসবাস করছি । তদ্রূপ বর্তমান কালের কিছু কিছু বিকাশমান অবকাঠামো ভবিষ্যত গন্তব্য স্থানকে নির্দেশ করছে । যেমন জাতিসংঘ আমাদের ইঙ্গিত দিচ্ছে ভবিষ্যতে আমাদের এই পৃথিবী জাতিসংঘ নামক একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হবে । কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকবে না এবং ভৌগলিক অঞ্চল ভিত্তিক মনোনীত প্রতিনিধিদের দ্বারা পৃথিবী পরিচালিত হবে । হয়তো তখন জাতিসংঘের আরও আধুনিকায়ন হবে ।

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে সমস্ত দেশের জনসংখ্যার বেশিরভাগই নাস্তিক যেমন ডেনমার্ক ,সুইজারল্যান্ড ,সুইডেন , ফ্রান্স,জার্মানি , চীন ,রাশিয়া, হল্যান্ড. ইজরাইল….. ইত্যাদি দেশগুলো পৃথিবীর উন্নত ও শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে । ইহা আমাদের ইঙ্গিত দিচ্ছে ভবিষ্যত প্রজন্ম ধর্ম ত্যাগ করে নাস্তিক হবে এবং পৃথিবী শান্তি ,আনন্দ , প্রগতি ও সার্বিক উন্নয়নের দিকে ধাবিত হবে ।

পিছন মানে অতীত এবং সম্মুখ বা অগ্রগামী মানে ভবিষ্যৎ এর নির্দেশক । তাই এই সময়কার কিছু কিছু জ্ঞানীগুণী তথা অগ্রগামী ব্যক্তিদের মানসিকতা আমাদের ভবিষ্যত বংশধরদের মানসিকতা কেমন হবে তার ইঙ্গিত প্রদান করছে ।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD