শাহখাকি নগর ও জুড়ী সাব পোস্ট অফিস
।।
হযরত শাহজালালের অন্যতম সঙ্গী পূর্ব সিলেটের অন্যতম পীর দস্তগীর হযরত শাহ গরীব খাকিকে আলোয় আনতে আমাদের গ্রাম গোবিন্দপুরকে শাহখাকি নগর নাম পরিবর্তন করতে চেয়েছি একসময়। শাহখাকি সাহিত্য সংসদ একই লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা। আমার ফিরে ফিরে দেখা জুড়ী সাব পোস্ট অফিসের গুরুত্ব এবং আমাদের সম্পর্ক আজ অতীত স্মৃতি।জুড়ী সাব পোস্ট অফিস এখন জুড়ী উপজেলা ডাকঘর।কৈশোরে থেকেই এর সঙ্গে আমাদের গোপন প্রণয়।চিঠিপত্র,পত্রপত্রিকা আসবে।সকালে গিয়ে খবর নিতাম ডাক এসেছে কি না?
গোবিন্দপুর গ্রামের নাম শাহখাকি নগর রাখলাম আমি,ফখরুল ইসলাম শামিম মামা,মুহিব জামালি চাচা ও হাফিজ আব্দুল মান্নান চাচা মিলে। নিজেরা সিলেট,ছাতক ও ঢাকা থেকে নানাভাবে শাহখাকি নগর লিখে ব্রাকেটে গোবিন্দপুর দিয়ে চিঠি পাঠাতাম,আবার গ্রহণ করতাম।পত্রপত্রিকায় ও এভাবে ঠিকানা দিতাম।উদয়ন সহ অনেক খ্যাত অখ্যাত পত্রিকার আমরা ডাকযোগে গ্রাহক হতাম।আবার জুড়ী প্রতিনিধি হিসাবে দৈনিক ও সাপ্তাহিক ও অনেক কাগজে কাজ করতাম।তারাও পত্রিকা পাঠাতো।
পোস্টম্যান পরিচিত।চেহারা দেখেই প্রতদিনের হাজিরা পেয়ে হাসতো।চা খাওয়াতাম বাইরে জোর করে নিয়ে গিয়ে।হযরর শাহ গরীব খাকি তখন নিরবে বসে আছেন জায়ফর নগরের জঙ্গলে।তাকে বের করে প্রচার করা দরকার।প্রতিষ্ঠা করলা ‘হযরত শাহ গরীব খাকি সাহিত্য সংসদ’।শামীম মামা সভাপতি আর আমি সেক্রেটারি।অন্যরা নানা পদে।সামছুল ইসলাম সমছুও ছিলেন।
আরো ছিলেন আব্দুর রহমান ভাই,আব্দুস সামাদ কলামিয়া ভাই।ঢাকার কাগজে নিউজ করালাম।১৯৭৭থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত শাহখাকিকে আলোয় নিয়ে আসার আমদের এভাবে নানা চেষ্টা ছিল।পরে তিনি এমন ভাবেই বেরুলেন।আর তাকে খোঁজতে হয় না।নিজেই সামনে পড়ে যান।বাড়ির পাশেই শাহখাকি আলিয়া মাদ্রাসা।ভোকতেরায় শাহখাকি মসজিদ,শাহখাকি ইদগাহ রোড,শাহখাকি যাত্রী ছাউনি এবং জায়ফর নগরে শাহখাকি হাফিজিয়া মাদ্রাসা এখন তার স্মৃতি তুলে ধরেছে।কিন্তু শাহখাকি নগর ভাবনা থেকে আমি বেরিয়ে আসি অসাম্প্রদায়িক চিন্তা থেকে।গোবিন্দপুর পালটে শাহখাকি নগর বানালে মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশ পায়।
তাই এখানেই থেমে গেলাম।ঢাকায় এসে ১৫/২০ বছর একটানা এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলাম।এখন বেশি বেশি থাকি।জুড়ীকে দেখি।আমির মঞ্জিল দেখি।তৃপ্তি শেষ হয়না।এ যেনো প্রেমিকার চিবুক।মাস্কের আড়ালে হারিয়ে পড়া চিবুক।সুযোগ পেলেই চেয়ে থাকতে মন চায়।সম্প্রতি হাফিজ মান্নান মারা গেছেন।দেখা হয় শামীম মামার সঙ্গে।আর শাহ খাকি ত এখন আমার বাড়ির প্রবেশ দ্বারেই।সে কথা উপরেই বলেছি।এখন বাড়ি গেলে তিনি আমাকে দেখেন।মিটমিটিয়ে হাসেন।কখনো কখনো মনে হয় সেসব অতীত স্মৃতি নিয়ে রোমন্থন করে লাভ কী?আর খুব বেশিদিন নয় ত আমারও অতীত হবার দিন দ্রুত দাবমান।তাই আর বেশিকিছু ভাবতে চাই না।এবার বিজ্ঞান কবিতার মধ্যে জীবনকে বিলিয়ে দিতে চাই।
Leave a Reply