শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৭ অপরাহ্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের মামলায় মেয়ে গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের মামলায় মেয়ে গ্রেফতার

লোকমান হোসেন পলা।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তানিয়া খন্দকার (৩৩) নামে এক সাবেক যুব মহিলা লীগের নেত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে তাকে গ্রেফতারের পর দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। তানিয়া সদর উপজেলার বিল কেন্দুয়াইয়ের জহিরুল হকের মেয়ে ও সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য। তানিয়ার বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন তার মা রিনা বেগম। তিনি তার মামলায় তানিয়াকে চোর, মাদকাসক্ত, বেহাইয়া ও উচ্চ বিলাসী হয়ে বেপরোয়া চলাফেরার কথা উল্লেখ্য করেছেন।

মামলার এজহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিল কেন্দুয়াইয়ের জহিরুল হকের কন্যা তানিয়া খন্দকার। ২০০৪ সালে তানিয়াকে জেলার বিজয়নগরে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তানিয়া ৩ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মা হন। এরই মাঝে তানিয়া বেপরোয়া হয়ে উঠে। সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় মাদকের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। ফলে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর সাথে খারাপ আচরণ শুরু হলে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হলে ৪সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয় তানিয়া। বাবার বাড়িতে আশ্র‍য় নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে সে। মায়ের কাছে ৪সন্তান রেখে খারাপ প্রকৃতির লোকজনের সাথে মিশে বেহাইয়াপনা ও উচ্চ বিলাসী চলাফেরা শুরু করে তানিয়া। তানিয়ার মা রিনা বেগম তাকে বাধা দিলেও কোন কাজ হয়নি। রাতের পর রাত বাড়িতে না ফেরে বাইরে কাটিয়েছে। বাবা ও ভাইয়েরা প্রবাসে থাকার সুবাদে তার পুরুষ সঙ্গীদের নিয়ে খালি বাড়ির দুতলার কয়েকটি কক্ষ দখলে নিয়ে সেখানে মাদক সেবনের আস্তানা গড়ে তুলেন। সেই কক্ষ গুলোতে বসতো ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক সেবনের আসর। সেই আসরে বাইরের লোকজনের আসা যাওয়ায় ও তানিয়ার বেহায়াপনায় অতিষ্ঠ হয়ে তার মা এবং ভাইয়ের স্ত্রী বাধা দিলেও আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে সে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে তানিয়ার নোংরামি ও তার সঙ্গীদের যন্ত্রণায় প্রবাসে থাকা ভাই আশার স্ত্রী হাফসা বেগম প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ করায় ভাইয়ের স্ত্রী হাফসাকে মারধর করে জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে স্বার্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। এসময় তানিয়ার মা রিনা বেগম বাধা দিলে নিজের মাকেও কাঠের রোল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধোর করে ও চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর বাড়িতে তাদের কাউকে ঢুকতে দেয়নি তানিয়া। এর কিছুদিন পর তানিয়া বাড়ির ২৪ টি কাঠগাছ ৮০হাজার টাকায় বিক্রয় করে ও ঘরে থাকা প্রায় দুইলক্ষ টাকা এবং জরুরী কাগজ পত্র সরিয়ে ফেলে। এসব ঘটনায় তানিয়ার মা রিনা বেগম আদালতে মামলা করলে সদর মডেল থানা মামলাটি নথিভুক্ত করতে নির্দেশ দেন। এই মামলায় তানিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আলম তারা দুলী বলেন, তানিয়া খন্দকার দলের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল না। সে সদর উপজেলার আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিল। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে রাখা হয়নি। তিনি আরও বলেন, সে মাদকাসক্ত হয়ে গেছে। দলীয় কোন পদে না থাকলেও তানিয়া দলীয় কর্মকাণ্ডে আসা যাওয়া করায় তাকে আমরা নিষিদ্ধ করেছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা বলেন, তানিয়ার মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তানিয়াকে বিল কেন্দুয়াইয়ায় থেকে গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেলা হাজতে প্রেরণ করে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD