শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

বকরি ঈদ -পলক রহমান

বকরি ঈদ -পলক রহমান

বকরি ঈদ
-পলক রহমান।

১৯৪৭ সালের আগের মুহূর্ত পর্যন্তু পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে হিন্দু জমিদাররা নিজেদের জমিদারিতে কোরবানি বা গো-জবেহ করতে দিতেন না। জমিদারদের অত্যাচার বা আদেশ-নিষধ আর ধর্মীয় অনুশাসন মানতে গিয়ে ঈদুল আজহার সময় সামর্থবান মসুলমানেরা গরু না দিয়ে অনেকেই ‘বকরি’ অর্থাৎ ছাগল কোরবানি দিতেন। আর এভাবেই ব্রিটিশ আমলে ঈদ-উল-আজহা স্থানীয়ভাবে ‘বকরি ঈদে’ পরিণত হয়। এলাকা ভিত্তিক কোন কোন জায়গায় কোরবানি ঈদ বা কোরবানি বা কুরবানী রীদ বা বকরা রীদ হিসেবেও উচ্চারিত হয়ে এসেছে। আমাদের দেশে এখনও মফস্বল শহরের গ্রামে গঞ্জে ঈদ উচ্চারণ অপভ্রংশ হয়ে মুখে বলতে সহজ লাগে বিধায় ঈদকে রীদ বলা হয়। গ্রামের মানুষ কেন এই কিছুদিন আগেও শিক্ষিত মানুষকেও বলতে শুনেছি তাদের নাকি আগামী সপ্তাহে “রীদ ইউনিয়ন” আছে। এমন অনেক শব্দই খুব সহজ করে বলার প্রবনতা শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও পরিলক্ষিত। যেমনঃ দাউ দাউ-কে বলছি ধাও ধাও, আটান্নকে আঠান্ন বা আটপান্ন, আটাশি কে ওষ্টআশি, নদীর পাড় কে পার, কাপড় পরাকে পড়া ইত্যাদি ইত্যাদি। এমন অনেক শব্দ আছে যা আমরা শিক্ষিত মানুষও সচেতন ভাবেই অশুদ্ধ উচ্চারণ করে যাচ্ছি। যাক সে কথা। আজ প্রমিত বাংলা উচ্চারণ নিয়ে লিখতে বসিনি। এখনকার এবং ছোটকালের ঈদ নিয়ে কিছু লিখব বলে কলম নিয়ে বসেছি।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই ঈদের রয়েছে বিভিন্ন নাম। যেমন বাংলাদেশে এটি কোরবানির ঈদ বা বকরি ঈদ নামে পরিচিত। তেমনি ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানেও ঈদ-উল-আজহাকে বলা হয় বকরি ঈদ। মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মিসর ও লিবিয়ায় কোরবানির ঈদকে বলা হয় ঈদুল কিবির (বড় ঈদ)। কোথাও কোথাও আবার “বকরা” ঈদও বলা হয়ে থাকে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, হাজার বছর ধরে কোরবানির ধারাবাহিকতা পালন করলেও, এর সঠিক তাৎপর্য মুসলমানরা অনুধাবন করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। একইভাবে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রকৃত মর্ম অনুধাবন এবং তা গ্রহণেও বাঙালি সহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে মুসলমানরা যে অনেকটাই ব্যর্থ তা বলা যায়।
আসলে কোরবানি দিতে হয় মানুষের সব রিপুকে: কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদিকে দমন করার অভিপ্রায়ে। সৎ পন্থায় উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা পশু কোরবানির মাধ্যমেই তা সম্পন্ন হয়। কিন্তু আমরা কি তার মর্ম আজও উপলব্ধি করতে পেরেছি? উপলব্ধি করতে পেরেছি কি আল্লাহর আদেশ পালন করতে গিয়ে বাবা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর আদেশে তাঁর প্রানের অধিক প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ) এর ত্যাগ! আর তাই মুসলিম সমাজে এখনো সত্যিকারের মসুলমানিত্ব, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, মায়া, প্রেম, ভালোবাসা, মানবতা এবং মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনো হিংসা, হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি, লুট, আত্মসাৎ, খুনাখুনি, ধর্ষণ আর অশান্তি বিরাজ করছে আমাদের সমাজে, জাতিতে। এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে আমরা পশু কোরবানি দিলেও আমাদের মনের ভেতরে লুক্কায়িত পশুত্বকে কোরবানি দিতে পারিনি বা পারছি না। যা প্রকৃত পক্ষে ঈদুল আজহার অন্তর্নিহিত শিক্ষা।
আমরাও ছোটকালে বকরি ঈদ বলতাম। বকরি ঈদ এলে মনে আছে বাবার সাথে গরু বকরির হাটে যেতাম গরু বকরি কিনতে। কারন আমাদের বাড়িতে প্রতি কোরবানি ঈদে একটি গরু ও একটি বকরি (খাসি) কুরবানী দেয়া হত।
সেই গরু বকরি বাড়িতে আসলে কত আদর যত্ন। বকরিকে কাঁঠালের পাতা, সজনের পাতা, আম পাতা পেড়ে দেয়া। ভাতের সাথে ভাতের মাড় খাওয়ানো। গরুর জন্য শুকনো খড় ছোট ছোট করে কেটে ভুঁসির সাথে একটু লবন খৈল দিয়ে চাড়িতে মাখিয়ে তিন চার বেলা রাখাল মামার সাথে খাবার দিতাম। গোয়াল ঘরে অন্যন্য গরুদের পাশে আলাদা করে রাখার ব্যাবস্থা হত। নইলে নতুন গরুর সাথে বাড়ির গাই গরু ও হালের বলদেরা ঢিসাঢিসি করত।
খুব সকালে উঠে গোয়াল ঘরের কাছে ঘুর ঘুর করা। গরুর চূণার গন্ধ একটু খারাপ লাগত। তাই বাড়ির রাখাল মামা কখন এসে গোয়াল ঘর পরিস্কার করবে, কুরবানির গরু বাইরে আসবে, নেড়ে নেড়ে দেখব। রাখাল মামা বলে দিত গরুর গলার নীচ থেকে সামনের পায়ের নীচ পর্যন্ত ঝুলা চামড়া যাকে শিশির বা গলকম্বল বলে। অঞ্চল ভিত্তিক হয়ত আরও লোকাল নাম আছে। সেই চামড়ার ভেতরে হাতের আংগুল, তালু দিয়ে বুলিয়ে দিতে থাকলে গরু রাগ করে না। চোখ বন্ধ করে আরাম খুঁজে। ব্যাস শুরু হয়ে যায় সেই পরীক্ষা। মনে আছে শীতের সময় ঈদ হলে গরুর এবং বকরির গায়ে চটের জামা পরিয়ে দেয়া হত শীত নিবারণের জন্য।
ক’দিন পরে মানে ঈদের বা কুরবানির আগের দিন দেখতাম গরুর চোখে পানি। খুব কষ্ট হত। মা’কে গিয়ে বলতাম। মা বলতেন গরু টের পেয়ে যায় তাকে কুরবানী দেয়া হবে। রাখাল মামা বলত এটা ভালো। মানে আল্লাহ এই কুরবানির গরু কবুল করেছেন। কিন্তু আমার খুব কষ্ট লাগত। ভাবতাম আহারে কালকেই তাকে জবাই করা হবে। ঈদের দিন খুব ভোরে উঠে গরু বকরিকে নিয়ে রাখাল মামার সাথে বাড়ির লাগয়া ঘাটলা পুকুরে নিয়ে গিয়ে খড়ের কুন্ডুলি দিয়ে গা ধুয়ে পরিস্কার করতাম। গভীর পানিতে গরুর সাথে সাঁতার কাটতাম। বকরি গুলো হত যন্ত্রনার। সেই যে ভ্যাঁ ভ্যাঁ শুরু হত কিনে নিয়ে আসার পর তা শেষ ছুরির তলে। আমাদের বাড়িতে আব্বা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন দিন তিনি নিজেই ছুরি দিয়ে জবেহ করতেন। এতে নাকি বেশী নেকী আদায় হয়। তা ছাড়া যিনি কুরবানী দেন রেওয়াজ অনুযায়ী তিনি যদি ছুরি চালিয়ে জবেহ করতে পারেন তবে সেটাই উত্তম।
মনে আছে কুরবানির গুরু জবেহ দেয়ার জন্য আমাদের বাড়িতে একটা বেশ লম্বা ধারালো ছুরি ছিল। সেটা ঈদের আগের দিন রাখাল মামা বর্গা কাঠ এংগেল করে বসিয়ে বালু দিয়ে চকচকা করে ধার করে রাখত। সাথে আরও ছোট বড় ছুরি, চাকু, বটি, হাইসা ধার দেয়া হত। এটা দেখলেও মনে হত বকরি ঈদ হচ্ছে। ভোরে ভোরে গরুকে গোসল দেয়ার পরে ভাবতাম বুঝি চোখের পানি মুছে গেছে। ঈদগাহ মাঠ থেকে সকাল সকাল নামাজ পড়ে এসে দেখি না, বরং পানিতে চোখ আরও ভাসছে। কিন্তু আমার মনের ভেতরে সেই গরুর কান্না খুব দাগ কাটত। সেটা আজও ভুলতে পারি না। তাইত এ বয়সে এসে সে অনুভূতির কথাটা মনে করে লিখেছি “মায়া” শিরোনামে এক কবিতায়। সে কবিতার কিছু অংশ তুলে ধরলাম আজ।
”… দেখি রিক্সাআলা নেহায়েত অশিক্ষিত আর দুর্বল বলে সড়কে কেউ কেউ তাকে একটু ভুলের জন্যই গালি
দেয়, ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। তখন মায়া
হয়, বড্ড মায়া! এমনই এক রিক্সা চালকের মুখ
দেখে সেদিন বড্ড মায়া লেগেছিল। ওর রিক্সায় চড়ে
যেতে যেতে তাই জিজ্ঞেস করি-
“তোমার বাড়ি কোথায়?”
রিকশা চালক কথা বলছে না। একটু আগেই
লাঞ্ছনার ঘা তখনও দগ্‌ দগে। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস
টেনে গামছায় চোখ মুছতে মুছতে বলে-
“হামার বাড়ি অম্পুর (রংপুর) বাহে।”
“ঢাকায় কত দিন হল?”
আবার কথা নেই। হয়ত মনে পড়ে যায় তার
ছোট্ট গ্রাম, ছোট্ট সংসার, বউ আর সন্তান মিলে
ছোট্ট জীবনের কথা।একটু সময় নিয়ে বলতে থাকে-
“বাহে হামার দুক্কের কথা আর কি শুনবেন,
হামরা কচু ঘেচু খওয়া দ্যাশের নোক, ধন্না (ধল্যা) নদীর
পাড়ত হামার গাঁও। বেটি ছাওয়া (বউ) মানসীর স্বপ্ন।
মোক কলি”-
“সবাই ঢাকাত জাওছে, তম্রাও তো এনা ঢাকাত যাবার
পারেন। কত জনা ঢাকাত্‌ জ্যায়া বড় নোক্‌ হলি। তোমরা টেকা পাইসা কামাই করি ধরি আইসেন, এনা সুখ চাই!
“কত কনু এইঠেই তো হামরা ভালো আছি, দু’বেলা পেটত
যা জুটে তাই হামার ভালো। ওই ভিন দ্যাশত জ্যায়া
কি- না কি হয়, তোমাক ছাড়ি যাবার মন চায় না।
ক্কাঁয় শোনে মোর কথা। তা তো তোমরা নিজের চোখোত
দেখলেন। আজ হামাক অসম্মানি করলি।”
বলতে বলতে রিক্সা চালক আবার চোখের জল মুছে।
ও চোখে তখন জল নয় যেন জিগার আঠা
রক্ত হয়ে ঝরতে চায়।
বললাম- “ঢাকা ছেড়ে চলে গেলেইতো পার”।
“মায়া বাহে মায়া। বউটার স্বপ্নের জন্যি মায়া নাগে।”
ভাবলাম, রিক্সা চালকেরও মায়া আছে! টাকা ছাড়া
আবার কিসের মায়া? জানতে বড্ড ইচ্ছে হল।
তাই জিজ্ঞেস করলাম-
“ তোমার আবার কিসের মায়া?”
রিক্সা চালক আমায় অবাক করে দিয়ে বলল-
“স্যার, সামনে করবানী ঈদ, এলা কত পশু কোরবানি হইবে।
নামাজের দিন পশুগুলার চোখোত্‌ চায়া দেখছেন? ওমারচোখোত্‌ পানি ঝরে, হামার বড্ড মায়া নাগে, তখন ভাবিপশুর নাগি এত মায়া, তাইলে বউটার জন্যি কেন মায়া হবার নয়…!”
মায়া কি কম ছিল মা’র হৃদয়েও। বাবাকে আগেই বলে রাখত গরু আর বকরির চামড়া বিক্রি করা টাকা যেন তার হাতে আসে। এর কারন তার পাড়া পড়সির পরিচিত মানুষ জনদের মধ্যে সে টাকা ভাগ করে দিবে। তারা কেউ রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় নয়। অথচ তাদের জন্য মা’র কত ভাবনা, কত মায়া। আমরা যাদের কাউকে গুনদ্রী খালা মানে গুনাই বিবি খালা, ফতে খালা মানে ফাতেমা খালা, নজু খালা মানে নুরজাহান খালা বলে ডাকতাম। এমন অনেক পাড়ার দরিদ্র খালারা যারা মা’র অবসরের সংগী ছিল। তাদের জন্যও মা’র যে কত মায়া ছিল। আজ ভাবলে চোখে পানি আসে। সকলেই আজ অতীত স্মৃতি। এই সব খালারা যারা মা’র চুলটায় তেল লাগিয়ে দিয়ে চিরুনী করে বেনী বেঁধে দিত বিকেলের বারান্দায় বসে।
মাথা ধরলে কপালটা টিপে দিত। হয়ত উকুনের সন্ধানে চুলে সময় কাটাতে বিলি কাটত। মাঝে মাঝে নানীও এসে সংগ দিত এ সব আড্ডায়। কত আনন্দ, কত কথা, হাসাহাসি। ফাঁকে পানের বাটা থেকে পান বের করে মশলা, আলাপাতা বা সাদা পাতা দিয়ে পানের খিলি মুখে পুরে রসিয়ে রসিয়ে চিবানো। আর গন্ধে মৌ মৌ করত চারিপাশ। আমি মা’র কাছে ঘুর ঘুর করতাম। বলতাম আম্মু তোমার মুখ থেকে হা করে বাতাস দাও না একটু। মা বলতঃ দেখেছ পাগল ছেলের কান্ড? পাড়ার খালারা বলত- “দেন না বুবু। পানের মশলার গন্ধ বের হইছে। খুব সৌন্দর্য। ছেইলি যখন বুলছে তখন একটু পানের মশলার বাসনাডা দিই দেন”।
এ ভাবে ঝিম আড্ডায় মা-খালাদের কাটত সারাটা বিকেল। সে যে কি এক দিন ছিল কোথায় যেন সে সব দিন হারিয়ে গেল চোখের পলকে।
আজ বকরি ঈদকে হয়ত বকরি ঈদ খুব কম লোকই বলে। “কুরবানির ঈদ” এ নামেই সমধিক পরিচিত এবং পালিত। কিন্তু সেই গ্রাম এখন লন্ঠন কুপি হারিয়ে ইলেক্ট্রিক বাতির আলোয় উদ্ভাসিত। মাটির দেয়াল, টনের বেড়া, টিনের চাল হারিয়ে ইট আর কংক্রিটের দখলে খোলা বারান্দা, ঢাউস উঠোন। এখনও কুরবানী হয়। কিন্তু ছোট বেলায় আনন্দ করা কুরবানী খুঁজে পাই না। খুঁজে পাইনা দর্জি মামার পায়ের সেলাই মেশিনে তৈরি করা শার্ট, পাঞ্জাবী, পাজামা পরার আনন্দ। ঈদ আসছে এমন সময় কিছু দিন আগেই দর্জি মামার পা পড়ত বাড়ির বৈঠক ঘরে। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে, কখনও হাত উঁচিয়ে, গলা উঁচিয়ে, কোমরের হাতের মাপ দিতে হত। কি আনন্দ। নতুন কাপড়ের গন্ধ শ্বাস ভরে নিতে নিতে ঈদ পার করা, কোলাকুলি করা। আহ্ সেটা এখন ভাবাই যায় না। এই আর এম জি অর্থাৎ রেডি মেইড গার্মেন্টস এর যুগে বাংলাদেশ যুগান্তকারী পদক্ষেপ রাখার পরেই যেন হারিয়ে গেলেন দর্জি মামারা, হারিয়ে গেল সেই নেটিভ আনন্দ। এর উপরে “মরার ‘পরে খাড়ার ঘা”। এসেছে পেন্ডামিক কোভিড-১৯। যার সাথে আমরা করোনা বলে প্রথম দিকে পরিচিত হয়েছিলাম।
২০১৯ এর ডিসেম্বরের দিকে কোটি কোটি মানুষ খেকো প্লেগ মহামারীর মতই সেই চীনেই এবারে উহান প্রদেশে করোনা আবির্ভাব হয়ে সারা পৃথিবীকে করেছে অসুস্থ। হাজারে হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মরছে প্রায় প্রতিদিন! কি নির্মম সেই চিত্র। এক সময় বাবা, মা, স্বামী স্ত্রী, সন্তান মারা গেলে তাদের কাছে জীবীতরাও কেউ যেতে পারেনি। কবর বা শ্মশানেও গিয়ে প্রিয় মানুষটির সৎকার করতে পারেনি। সে অবস্থা কিছুটা শিথিল হলেও বেড়েছে হাজারও বিড়ম্বনা। এরই মাঝে ২০২১ সালের বকরি ঈদ সমাসন্ন। কি হবে এই লগডাউন, সাটডাউন, সোস্যাল ডিস্টেন্স মানার ঈদ পালনে। নেটের মাধ্যমে গরু বকরি বেচা-কেনা। কে খাওয়ালো, কি খাওয়ালো, কে ছুরি নিয়ে কোথায় জবেহ দিল। চামড়ার টাকার কি হল কে রাখবে কার খোঁজ। ঈদের নামাজই বন্ধ। কোলাকুলি তো এখন পাপসম। এই ঈদ নিয়েও অনেক কষ্টের ” হায় ঈদ বাঁকা চাঁদের ঈদ” শিরোনামে এক কবিতায় অনেক কষ্ট পেয়ে লিখেছিলাম অনেক কিছু। তার কিয়োদ অংশ তুলে দিয়ে শেষ করব আজকের লিখা “বকরি ঈদ”।
“… হায় ঈদ! বাঁকা চাঁদের ঈদ-
তুমি কি নতুন জামা পর গায়,
থাকে কি নতুন জুতা পা‘য়,
আতর সুগন্ধি মেখে যাও কি ঈদ্গাহে?
দেখ কি আজ সারা মুসলিম গৃহে গৃহে,
পূর্ব থেকে মধ্য, মধ্য থেকে পশ্চিম দিকে,
প্রতিটি জীবনের খণ্ড বাঁকে বাঁকে-
লাশ হয়ে ফিরছে যে খুশি,
সে লাশের গন্ধে তুমি কি হও উর্বশী?
নাকি তুমি নতুন জামা পর দুই চোখে,
দেখ না তাই কি হারায়ে যায় আলোকে… “

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD