শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন

নেশার টাকার জন্য ছুরি ধরে নিজের সন্তানদেরও জিম্মি করতো

নেশার টাকার জন্য ছুরি ধরে নিজের সন্তানদেরও জিম্মি করতো

লোকমান হোসেন পলা।।

নেশার টাকার জন্য ছুরি ধরে নিজের সন্তানদেরও জিম্মি করে মায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী তানিয়া খন্দকার। বাধ্য হয়ে তার মা রিনা বেগম টাকা দিতেন। এ কথা জানিয়েছেন তানিয়ার বড় বোন তাসলিমা আক্তার।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) তানিয়া খন্দকারের মা রিনা বেগমের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় সদর মডেল থানা পুলিশ। তানিয়া খন্দকার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিল কেন্দুয়াইয়ের প্রবাসী জহিরুল হকের মেয়ে। রিনা বেগম তার মামলায় নিজের মেয়ে তানিয়াকে চোর, মাদকাসক্ত, বেহাইয়া ও উচ্চ বিলাসী হয়ে বেপরোয়া চলাফেরার কথা উল্লেখ্য করেছেন।

এ বিষয়ে তানিয়ার বড় বোন তাসলিমা আক্তার বলেন, আমরা ৪ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তানিয়া ৩য়। বাবা ও এক মাত্র ভাই প্রবাসে থাকেন দীর্ঘদিন যাবত। ২০০৪ সালে পারিবারিক ভাবে তানিয়াকে জেলার বিজয়নগরে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তানিয়া ৩ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরই মাঝে তানিয়া বেপরোয়া হয়ে উঠে। শ্বশুর বাড়ি সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় মাদকের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। ফলে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর সাথে খারাপ আচরণ শুরু হলে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে ৪সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয় তানিয়া। বাবার বাড়িতে আশ্র‍য় নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে সে।

তিনি বলেন, বাবার বাড়িতে আসার পর মায়ের কাছে ৪সন্তান রেখে খারাপ প্রকৃতির লোকজনের সাথে মিশে বেহাইয়াপনা ও উচ্চ বিলাসী চলাফেরা শুরু করেন তানিয়া। যুক্ত হোন ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুব মহিলা লীগের রাজনীতির সাথে। তবে তার বেহায়াপনার কারণে জেলা নেতৃবৃন্দ তাকে বেশির ভাগ সময় দূরেই রেখেছে। দিন দিন বেড়েই চলে তার বেহায়াপনা। তানিয়ার মা রিনা বেগম তাকে বাধা দিলেও কোন কাজ হয়নি।

তিনি তার ছোট বোন সম্পর্কে বলেন, নেশায় আসক্ত হয়ে পরিবারকে না জানিয়ে অনেক সময় রাতেও ফেরেননি তানিয়া। বাবার বাড়ির দ্বিতীয় তলা তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে দখল করেন। সেখানে বসাতেন মাদকের আসর। বাইরে থেকে অনেক পুরুষ মানুষ আসলে, রাত ১২টায় তারা যেতেন। আইন অনুযায়ী তার বিয়ে হয়েছে ২টি, তবে বিয়ে ছাড়া তার স্বামী কয়টি আছে তা গুনে শেষ করতে পারব না।

তাসলিমা বলেন, টাকা না থাকলে নেশার টাকার জন্য সে তার সন্তানদেরও জিম্মি করতো। তাদের গলায় ছুরি অথবা কখনো তাদের গলা চেপে ধরে আমার মায়ের কাছে টাকা দাবি করতো। এই অবস্থা দেখে মা টাকা দিয়ে দিতো। সর্বশেষ ঘটনার দিনও সে তার বড় মেয়ের উপর অত্যাচার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা বলেন, তানিয়ার মা বাদি হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে, আদালত সদর মডেল থানাকে মামলাটি নথিভুক্ত করতে বলেন। সদর মডেল থানায় মামলাটি ৮ অক্টোবর নথিভুক্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) তানিয়াকে বিল কেন্দুয়াইয়ায় থেকে গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD