আমার দেখা আমার লেখা -৯।।
-হাসনাইন সাজ্জাদী
কবিতার ভাব,রস ও বিজ্ঞান
।।
কবিতা বুঝতে পারার কাজটি যতটা সহজ, লেখার কাজটি ততটা সহজ নয়।কবিতা ভাবপ্রধান,রসপ্রধান না জ্ঞানপ্রধান হবে তা নিয়ে মতের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।তার কারণ দু’টি।
১.কবিতা সহজ মানুষদের নিকট সহজ বাক্যের আবেগময়তার নাম।এখানে তাদের নিকট কবিতার ভাবপ্রবনতা লক্ষ্যনীয়।পাঠের পরিতৃপ্তি এখানে প্রধান।তাদের যদি মনে ধরে তবেই ভাবেন কবিতা হয়েছে।
আবার কারো কারো নিকট কবিতার রসপ্রধান ভুমিকা প্রত্যাশিত।তারা আদি সুত্র; ‘কাব্যাং বাক্যং রসাত্মকম’ নিয়ে পড়ে আছেন।কিন্তু উত্তর আধুনিক ও ঔপনিবেশিক তথা বিজ্ঞান কবিতার যুগে রসের গুরুত্ব যে কমে আসছে তা তারা জানেন না।তাই রসবিহীন জটিল বাক্যের কবিতা সহজবোধ্যাদের নিকট কবিতা হয়ে উঠে না।
২.সহজ পাঠকরা কবিতাকে জ্ঞানবিজ্ঞানের উপাদান হিসাবে গ্রহণ করেননি।করেছেন বিনোদন হিসাবে।বিনোদন যত ফাও হয় তত ভালো।কবিতায় তাই মেধা ও মননের চর্চা করতে এক শ্রেণির পাঠক বরাবরই উন্নাসিক।জটিল বা জ্ঞানচর্চার প্রয়োজন পড়লেই তারা ভাবেন কবিতা হয়নি!
তারা আসলে কবিতা বোঝেন না।কিন্তু মনে করেন তারা কবিতা বোঝেন।একজন লোকসাহিত্যিক বা লোকসংস্কৃতির গবেষক কবিতাকে যেভাবে পড়তে চান তা এবং একজন আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানী যে ভাবে পাঠ করতে চান তার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকবে।একই অবস্থা কবিদের মধ্যেও হতে পারে।গীতি কবিতার লেখক ও বিজ্ঞান কবিতার লেখকের মধ্যে ভাবনার মিল কখনোই এক হবার নয়।
কবিতা নিয়ে তাই লেখক,পাঠক দূরত্ব এখানে বিরাজমান।একই সঙ্গে কবিতা লেখকদের নিকটও পার্থক্য থাকবে যুগ যুগ…
Leave a Reply