অরোরা
শিরীণ আক্তার
কথাগুলো ফুটতে পারত ভালোবাসার
কৃষ্ণচূড়া নয়ত জারুল হয়ে
হতে পারত বৃষ্টির একটানা রিমঝিম সুর
দখিনা বাতাস হয়ে কানের ভেতর সুধা ঢেলে নেচে গেয়ে ফিরতে পারত
প্রতিউত্তরে পায়রার ঠোঁটে নীল খামে ভরা ভালোবাসার চিঠি উড়ে আসত।
কিন্তু সে কথাগুলোকে বিষণ্নতার চাদরে মুড়িয়ে ঝরা ফুলের মত ঝরিয়েছ তুমি
আর তা কোঁচড় ভরে কুড়িয়ে উত্তাপে শুকিয়ে রুদ্রাক্ষের মালা করে রেখেছি
সময়ে সময়ে তারই শোকার্ত মালা জপি আমি ,
গজের পরতে পরতে ভালোবাসার মলমে মমি করে হৃদপিরামিডে বাক্সবন্দি করেছি।
আমাকে বলা কথাগুলো কবিতার উপমায় তোমার লেখার রসদ
তোমারই বর্ণনায় তা হয়ে উঠে অপরাজিতা অর্কিড ছাওয়া শীতল বাথানে।
অনবরত কথার ফোয়ারা ছোটানো আমাকে
উপেক্ষায় বানিয়েছ বিমূর্ত অশ্বত্থের বনসাই,
লোকাল ট্রেনের মত প্রতি স্টেশনে ঘুরে ফিরছে আজ কথাগুলি -আমা অব্দি পৌঁছানোর আগেই হয়ে উঠছে গান নয়ত কবিতা!
কর্পুরের গন্ধমাখা সে কথাগুলি কবিতায় এসে আতর -লোবান হয়ে উবে যায়
বহুদূর হতে আমি সে সুবাস টের পাই
বাসি বকুলের সুবাস জড়ানো সে কথাগুলি শ্মশানের পোড়া ছাই মাখা কালি হয়ে ঝরছে কবিতায়
বিসর্জনের সেই কবিতা আমি ভাসিয়ে দেই অলকানন্দায়।
আমি শুনতে চাই না সে কবিতা
আমি হতে চাই না কবির কবিতার উপমা প্রতীক,
আমি এক জ্বলন্ত অরোরা-হতে চাই জীবন্ত কবিতা!
Leave a Reply